ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ ভাদ্র ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বিল্ডিং কোড মেনে চললেই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচা সম্ভব : নিশাত


প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


বিল্ডিং কোড মেনে চললেই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচা সম্ভব : নিশাত

   

স্টাফ রিপোর্টার : ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল হওয়ায় বাংলাদেশ রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিতে। বিল্ডিং কোড মেনে না চলা, বন উজাড়, পাহাড় কেটে ধ্বংস করাসহ নানা উপায়ে আমরা যেন ভূমিকম্প নামক মহা বিপদকে ডেকে আনছি।

ড. আইনুন নিশাত বলেন, সারা দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা লক্ষাধিক। বাংলাদেশের নাগরিকদের অবশ্যই বিল্ডিং কোড মেনে নতুন নতুন ভবণ তৈরীর উদ্যোগ নিতে হবে। আর যদি নিয়ম মেনে না চলা হয় তাহলে বিপদেও আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, একই সাথে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট ভূকম্পনেও বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে নতুন ভবন নির্মাণে সরকারি তদারকি আরো বাড়ানো প্রয়োজন। বার বার ভূমিকম্প এ কথাই  যেন স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা আসলে কতোটা প্রস্তুত। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে বাংলাদেশে  প্রায় ২  থেকে ৩ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের গবেষকরা জানান, রাজধানীতে দিন দিন বাড়ছে আকাশচুম্বী অট্টালিকার সংখ্যা। অল্প জায়গায় এতো বড় বড় স্থাপনা ভূমিকম্পের ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। শুধু তাই নয় বিল্ডিং কোড না মেনে তৈরি করা হচ্ছে ভবন। এতে স্বল্পমাত্রার কম্পনেই ভেঙ্গে পড়তে পারে অনেক ভবন। 

এছাড়া ভূমিকম্প পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায়ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। তৈরি করতে হবে  স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। জনসচেতনার জন্য চালাতে হবে ব্যাপক প্রচারণা। 

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প রোধ করা সম্ভব নয়, তবে আমরা প্রকৃতির ওপর অবিচার করে নিজেরাই  যেন ভূমিকম্প  ডেকে না আনি সে বিষয়ে সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প  নেই।

বাংলাদেশের ভূমিকম্প বলতে আসলে বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকার ভূমিকম্পকে বোঝায়। কারণ বাংলাদেশ আসলে ভারত ও মায়ানমারের ভ’অভ্যন্তরের দুটি ভ’চ্যুতির প্রভাবে আন্দোলিত হয়। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভারতীয়, ইউরেশীয় এবং বার্মার (মায়ানমারের)  টেকটনিক প্লেটের মধ্যে অবস্থান করছে। বাংলাদেশে ৮টি ভূতাত্ত্বিক চ্যুতি এলাকা বা ফল্ট  জোন সচল অবস্থায় রয়েছে, যথা: বগুড়া চ্যুতি এলাকা, রাজশাহীর তানোর চ্যুতি এলাকা, ত্রিপুরা চ্যুতি এলাকা, সীতাকুন্ড টেকনাফ চ্যুতি এলাকা, হালুয়াঘাট চ্যুতির ডাওকী চ্যুতি এলাকা, ডুবরি চ্যুতি এলাকা, চট্টগ্রাম চ্যুতি এলাকা, সিলেটের শাহজীবাজার চ্যুতি এলাকা (আংশিক-ডাওকি চ্যুতি) এবং রাঙামাটির বরকলে রাঙামাটি চ্যুতি এলাকা।

অতীতের এসব রেকর্ডকে প্রাধান্য দিয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন যে কোনও সময় বাংলাদেশে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। অর্থাৎ শিলার মধ্যে একটি ফাটল যার দৈর্ঘ্য বরাবর দৃশ্যমান স্থানচ্যুতি ঘটে। বাংলাদেশকে ভূমিকম্পের তীব্রতার ভিত্তিতে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে।

বুয়েটের গবেষকদের প্রস্তুতকৃত ভূ-কম্পন-এলাকাভিত্তিক মানচিত্রে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৪৩% এলাকা ভূমিকম্পের উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে (জোন-১), ৪১% এলাকা মধ্যম ( জোন-২) এবং ১৬% এলাকা নিম্ন ঝুঁকিতে (জোন-৩) রয়েছে। যেখানে ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দের ভূ-কম্পন মানচিত্রে ২৬% উচ্চ, ৩৮% মধ্যম এবং ৩৬% নিম্ন ঝুঁকিতে ছিলো। নতুন মানচিত্র অনুযায়ী, মাত্রাভেদে বাংলাদেশের বিভিন্ন।


   আরও সংবাদ