ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

বিঘা প্রতি কৃষকের ক্ষতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা


প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


বিঘা প্রতি কৃষকের ক্ষতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা

   

রহিদুল ইসলাম খান : যশোরের চৌগাছায় পাটের বাম্পার ফলন হলেও আশানুরূপ দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন কৃষকরা। কোন কোন ক্ষেত্রে বিঘা প্রতি প্রায় ৫ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। 

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৫৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের পাট চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। দাম ভাল পাওয়ার আশায় ১শ হেক্টর বেশি জমিতে পাট চাষ করেন কৃষকরা। তিনি বলেন এ বছর কৃষকের বিঘাপ্রতি গড় ১১ মন করে পাট উৎপাদন হয়েছে। যা বাম্পার ফলন হিসেবে ধরা হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে মনপ্রতি পাট বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪ শ’ টাকা। 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৯৫ শতাংশ জমির পাট কাটা শেষ হয়েছে। একদিকে আবহাওয়া বৈরি থাকায় (বৃষ্টি না হওয়ায়) পানির অভাবে সময়মত পাট জাগ দিতে না পারায় পাটের রং খারাপ হয়েছে। অন্যদিকে হঠাৎ করে পাটের বাজার দর পড়ে যাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

তারা জানিয়েছেন, নতুন পাট বাজারে আসার সাথে সাথে পাটের দাম কমে গেছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মন পাট ১৩শ থেকে ১৪শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর শেষ মৌসুমে ছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকা করে।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একবিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৮ হাজার ২শ’ থেকে ২০ হাজার টাকা। জমির লিজ ধরলে যে খরচ ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। চলতি মৌসুমে একবিঘা জমিতে পাট কাটতে ২ হাজার ৫শ টাকা, বিঘাপ্রতি সাড়ে তিনশ আটি পাট উৎপাদন ধরে প্রতিআটি পাটের বহন ৭ টাকা করে ২ হাজার ৫শ টাকা, ২ টাকা করে ৭শ টাকা, ধুতে ১২ টাকা করে ৪ হাজার ২শ টাকা। এছাড়া বীজ ১ হাজার, চাষ ৮শ, নিড়ানী ও বাছাই শ্রমিক ৪ হাজার ৫শ’ ছাড়াও চলতি মৌসুমে অধিক খরা হওয়ায় সেচ খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। 

অন্যদিকে ফলন হয়েছে বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১২ মন পাট। যার সর্বোচ্চ বাজার মূল্য ১৫ হাজার ৬ শ থেকে ১৬ হাজার ৮শ টাকা। আর পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে বিঘা প্রতি ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২শ টাকা। যাতে বিঘা প্রতি কৃষকের আয় হচ্ছে সর্বোচ্চ বিশ হাজার টাকা। ফলে কৃষক বিঘাপ্রতি তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের চাষী এবং উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে গত কয়েক বছর যাবৎ পাটের দাম ভাল থাকায় আর এবছর ধানের দাম একেবারে নিন্মমুখি হয়ে যাওয়ায় চাষীরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই হঠাৎ পাটের বাজার পড়ে যাওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। 

চৌগাছা বাজারে পাট বিক্রি করতে আসা আন্দারকোটা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর বদ্ধ ও পঁচা পানিতে পাট জাগ ও মাটি চাপা দেওয়ার কারণে পাটে সোনালী রং আসনি। তিনি বলেন পাটের দাম কমে যাওয়ায় লাভতো দূরে থাক ধার দেনাই পরিশোধ হচ্ছে না। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন বলেন, এ বছর পাটের উপাদন খরচ বেশী হয়েছে। সে তুলনায় বাজার দর অন্য বছরগুলোর তুলনায় অনেক কম। সে কারনে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। 


   আরও সংবাদ