ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চৌগাছায় ১২ একর জমি খাস দেখিয়ে দখলের চেষ্টা


প্রকাশ: ১০ অক্টোবর, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


চৌগাছায় ১২ একর জমি খাস দেখিয়ে দখলের চেষ্টা

   

যশোর থেকে খান সাহেব : যশোরের চৌগাছায় ব্যক্তি মালিকানা ১২ একর জমি খাস দেখিয়ে দখলের চেষ্টা করছে একটি মহল। আদলতের নির্দেশও অমান্য করছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগি জমির মালিকরা। 

জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর পূর্বে উপজেলার দিঘড়ী গ্রামের রুহুল আমিন ও আহসান উল্লাহ কাকুড়িয়া মৌজায় ১২৬৩ নং দাগে ১১.৮৬ একর জমি দাখিলা মূলে ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছেন। ১৯৯০ সালে ভূমি জরিপের সময় ভূলবশত উক্ত জমি সরকারি ১/১(খ) খতিয়ানে ১৭২৪, ১৮৬১, ১৮৬২, ১৮৬৩ ও ১৮৬৪ নং দাগে ধানী ও ডাঙ্গা শ্রেণীতে তফশিলভুক্ত হয়।

জমির মালিকরা যশোর জেলা জর্জ আদলতে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করেন। (মামলা নং ৪৭/৩ দেওয়ানী আপিল) দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ২০০৪ সালে ২৫ নভেম্বর আদালত রুহুল আমিন ও আহসান উল্লাহর পক্ষে রায় ও ডিক্রি জারি করেন। আদালতের নির্দেশনার ভিত্তিতে জমির মালিকরা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে বাংলা ১৪০১ সন থেকে ১৪২৪ পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭’শ ১ টাকা  খাজনা পরিশোধ করে উক্ত জমির নামপত্তন করেন। যাহার নম্বর ছিল (ঞগঈ ঘঙ- ১০৮ রীররর/১৬-১৭ ও গ/ঈ ঘঙ- ৩৯৪ রীররর/১৬-১৭) সেই থেকে জমির মালিকরা উক্ত জমি ভোগ দখল করে আসছেন। জমির নিচু অংশে তারা মাছ এবং উচু অংশে ধান চাষ করেন বলে দাবী করেন।

কিন্তু হঠাৎ করে চলতি বছরে ৫ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসক স্থানীয় পত্রিকায় জলমহল ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে কাকুড়িয়া মৌজার বিলের সাথে উল্লেখিত ব্যক্তিগণের মালিকানা জমিসহ মোট ৭৪.২১ একর জমি ইজারা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনপত্র জমা দেওয়া এবং উন্মুক্তকরনের দিন ছিল চলতি মাসের ছিল ১৭ তারিখ। কিন্তু শেষ তারিখ আসার পূর্বেই উক্ত জমি কাকুড়িয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি শ্রী পরিতোষ হালদারের নামে ইজারা প্রদান করেন। ইজারা বিজ্ঞপ্তির ৭ নং কলামে শর্তানুযায়ি সাব লিজ দেওয়া সম্পূর্ণ এ বেআইনি। কিন্তু লিজের শর্ত ভঙ্গ করে পরিতোষ হালদার উক্ত জমি হিজলি পোষ্ট মাষ্টার মশিয়ার রহমানসহ কয়েক ব্যক্তিকে সাবলিজ দেন।

এমতাবস্থায় জমির মালিকগন ১৬ এপ্রিল যশোর সহকারি জেলা জর্জ আদালতে আভিযোগ দাখিল করেন। আদালতের মামনীয় বিচারক বিবাদীদের উক্ত জমিতে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এসময় বিবাদীগণের পক্ষে তারকনাথ হালদার আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উপজেলা ভূমি অফিসে উক্ত জমির নামপত্তন বাতিলের আবেদন করেন।

এসময় জমির মালিকগন নামপত্তন কেসের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে যশোর জেলা ও দায়রা জর্জ আদালতে আবেদন করেন। বিচারক ২৭ মে বিবাদী পক্ষ জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সহকারি কমিশনার (ভূমি) চৌগাছা ও লিজ গ্রহিতা পরিতোষ কুমারকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিতে নির্দেশ দেন। বিবাদীরা জবাব দেওয়ার জন্য সময়ের আবেদন করলে আদালত ১০ জুুলাই পর্যন্ত  সময় মঞ্জুর করেন। কিন্তু উপজেলা ভূমি অফিস নির্ধারিত তারিখের পূর্বেই ৯ জুলাই জমির মালিকদের মালিকানা ভূমি বেদখল দেখিয়ে নাম পত্তন বাতিল করে দেন। 

ভূমি মালিকরা বলেন, উক্ত জমির নিচু অংশে আমরা দীর্ঘদিন মাছ চাষ ও উচু অংশে ধান চাষ করছি। বর্তমানে জমির সাবলিজ গ্রহিতা মশিয়ারসহ অন্যরা আমাদেরকে বিচারাধীন উক্ত জমি থেকে প্রতিনিয়ত উচ্ছেদ করার জন্য হুমকি দিচ্ছে।


   আরও সংবাদ