প্রকাশ: ২১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ পূর্বাহ্ন
চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা : যশোরের চৌগাছায় সাপের কামড়ে তন্বী খাতুন (১৩) নামে এক মাদরাসা ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সে শহরের চৌগাছা কামিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণির মেধাবী (রোল নং-১) ছাত্রী এবং যশোর সদর উপজেলার চান্দুটিয়া গ্রামের তবিবর রহমানের মেয়ে।
রোববার রাতে চৌগাছা শহরের মামাবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের ছোট মামা মিঠু দেওয়ান জানান, প্রতিদিনের মত লেখাপড়া শেষে মায়ের সাথে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে তন্বী। রাত দশটার দিকে তাকে ঘরের মধ্যেই বিষধর সাপে কামড়ালেও ওর মা কিছু বুঝতেও পারেনি। কাউকে ডাকেও নি। এক পর্যায়ে কিছু হয়েছে বুঝতে পেরে তিনি ওই ঘরে এসে দেখতে পান তার ভাগ্নীর মুখ দিয়ে ফ্যানা বের হচ্ছে। উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
মামা বাড়ির পরিবারিক সূত্র জানায়, মেয়েটি মায়ের গর্ভে থাকাবস্থায় তবিবর রহমান স্ত্রী পপিকে রেখে অন্যত্র বিয়ে করে। সেই শোক সইতে না পেরে পপি খাতুন মানসিক ভারসম্যহীন হয়ে পড়েন। সেই থেকে পপি বাবার বাড়িতেই থাকতেন। তন্বী জন্মের পরও মায়ের মানষিক ভারসম্য ফিরে না এলে বাবার বাড়িতেই স্থান হয় মা-মেয়ের।
তন্বী কথা বলতে শেখার আগেই বুঝতে পারে মায়ের অবস্থা। লেখাপড়ায় খুবই মনযোগী ছিল সে। ক্লাসে কোন অনুপস্থিতি ছিল না তার। একটু বুঝতে শিখেই তন্বী লেখাপড়া করে মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখত। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা ও সেবা করার স্বপ্ন দেখত। সে স্বপ্ন তার আর পূর্ণ হলো না।
চৌগাছা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল লতিফ বলেন, মেয়েটি যেমন মেধাবী তেমন নম্রভদ্র ছিল। ক্লাস ফাঁকি দিতনা কখনো। ওর ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শিখে মা'য়ের সেবা ও সুচিকিৎসা করাবে। সে ইচ্ছা আর পূর্ণ হলো না মেয়েটির।
তিনি আরো বলেন, রোববারই সে ক্লাস শেষে উপবৃত্তির ফর্ম পূরণের জন্য অফিস সহকারী তৌফিকের নিকট নিজের ছবি দিয়ে যায়। কে জানতো সেই ছবি আজ স্মৃতি হয়ে যাবে?
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, আজ সোমবার বাদ জোহর জানাজা শেষে তাকে মামাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।