ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

বকেয়া বেতনের দাবিতে প্রগতি ডিজিটাল-ডি ল্যাব রিজু হসপিটালের কর্মচারীদের বিক্ষোভ


প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


বকেয়া বেতনের দাবিতে প্রগতি ডিজিটাল-ডি ল্যাব রিজু হসপিটালের কর্মচারীদের বিক্ষোভ

   

মণিরামপুর যশোর থেকে আব্বাস উদ্দিন :  প্রতিবাদ-বিক্ষোভে আবারো আলোচনায় মণিরামপুরের প্রগতি ডিজিটাল-ডি ল্যাব এন্ড রিজু হসপিটাল। কথিত এই প্রতিষ্ঠানে নার্স-কর্মচারীরা ৬ মাসের বেতনের পাওনা টাকার জন্য মালিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে নিজ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তালাবদ্ধ করে আটক রাখার ঘটনা ঘটেছে। 

এছাড়া ঘর মালিক পক্ষ ঘর ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের প্রায় ২ লক্ষ পাওনা টাকার কারণে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নার্সদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভসহ অন্যান্য ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, ইতিপূর্বে নানা অঘটনের অভিযোগে যশোরের সিভিল সার্জনের নির্দেশে মণিরামপুর পৌর এলাকার মোহনপুর বটতলা নামক স্থানে অবস্থিত প্রগতি ডিজিটাল-ডি ল্যাব এন্ড রিজু হসপিটালের কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা হয়। অবশ্য অজ্ঞাত কারণে কিছুদিন পর ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে মালিক উপজেলার নেহালপুর এলাকার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ নামের ব্যক্তি। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মালিককে নিজ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন তথ্য জানার পর গণমাধ্যম কর্মচারী সরেজমিনে যায়। এসময় ওই প্রতিষ্ঠানের নার্স রিক্তা খাতুন, মনিরা খাতুন, সোনিয়া খাতুন, সুরাইয়া বেগম এবং আয়া কমলা রাণী তাদের মালিককে তালা মেরে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তারা ৬ মাসের বেতন বাবদ ৮১ হাজার ৩’শ টাকা পাবেন। 

দীর্ঘদিন ধরে তাদের বেতনের টাকা না দেয়ায় অনেক কষ্টে দিন অতিবাহিত হচ্ছে তাদের। এসময় প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর স্ত্রী পলি বেগমকে সেখানে উপস্থিত হতে দেখা যায়। এক পর্যায় নার্স-কর্মচারীদের সাথে মালিকের স্ত্রী বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এসময় এ প্রতিবেদকের সামনে নার্স মনিরা খাতুনসহ অন্যান্যরা গোপন তথ্য ফাঁস করে বলেন, কোন প্রকার অভিজ্ঞতা না থাকলেও মালিকের স্ত্রী পলি বেগম প্রতিষ্ঠানে এসে রোগীদের আল্ট্রাসনোগ্রাফীর রিপোর্ট করে থাকেন। 

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পলি বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি চুপচাপ ছিলেন।  একপর্যায় মুহুর্তের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হন ঘর মালিক সাবেক ইউপি মেম্বর ব্যবসায়ী নূর ইসলাম গাজীর স্ত্রীসহ কয়েকজন।

তিনি প্রতিবাদ কন্ঠে প্রকাশ্যে বলেন, ক্লিনিকের ব্যবসা করার জন্য ঘর ভাড়া দিয়ে চরমভাবে তাদের পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়েছে। এসময় তিনি অভিযোগ করেন ক্লিনিক মালিকের কাছে তাদের ঘরভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের ১ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। ঘর মালিক ব্যবসায়ী নূর ইসলাম গাজী বলেন, চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে তার পাওনা টাকা না পেলে প্রতিষ্ঠানে তালা লাগানো হবে। এদিকে ঘটনার সময় ওই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অপারেশন করাসহ কয়েকজন রোগী ভর্তি এবং তাদের স্বজনদের দেখা যায়। 

এসময় ভর্তি রোগীদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপস্থিত সকল নার্সরা বলেন, রোগীদের দেখা শোনা মালিক করবে। তারা আর ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করবেন না। এক পর্যায় তারা বেতনের পাওনা টাকার জন্য ওই প্রতিষ্ঠান থেকে মালিকের ফ্রিজসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যেতে তা জড় করতে থাকেন। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে নার্সরা তালাবদ্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে তার স্ত্রী পলি বেগম নার্সসহ অন্যান্যদের পাওনা টাকা পরিশোধ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।   


   আরও সংবাদ