ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মণিরামপুরে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্রীকে ধর্ষণ, মৃত সন্তান প্রসাব


প্রকাশ: ৫ নভেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


মণিরামপুরে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্রীকে ধর্ষণ, মৃত সন্তান প্রসাব

   

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : মণিরামপুরে স্ত্রীর সহযোগিতায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্রী (১৩) কে ঘরে মালিক কর্তক প্রতিনিয়ত ধর্ষণে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অতঃপর মৃতঃ সন্তান প্রসব। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর মামলা হলেও আসামিদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ বলছে আসামীদের কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের এমন বক্তব্যে সচেতন মহলসহ স্থানীয়দের অভিযোগ, এ ঘটনা জানা-জানি হবার পর যারা কথিত মিমাংসার নামে ধর্ষিত দরিদ্র ভিকটিম এবং তার পরিবারকে নানা ভাবে হুমকী দিয়েছে। তারাই আসামি দম্পতিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে লোক চক্ষুর আড়ালে রেখেছে। 

তাছাড়া উক্ত ঘটনায় মামলা অথবা ধর্ষক ঘরে মালিক ও তার স্ত্রীকে নিয়ে এলাকায় কোন শালিস-বিচার না হয়। তার জন্য স্থানীয় একটি চক্রের সাথে মোটা অংকের লেনদেন করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি।

উল্লেখ্য, অভয়নগর উপজেলার কালিশাকুল গ্রামের পিতা হারা দরিদ্র পরিবারের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্রী (১৩) নিকটবর্তী মণিরামপুর উপজেলার কপালিয়া এলাকায় প্রতিবন্ধী স্কুলে লেখাপড়া করত। স্কুলে যাওয়া আসার পথে তার পরিচয় হয় ময়না বিশ্বাস নামে এক গৃহবধূর সাথে। ওই গৃহবধূ কপালিয়া এলাকার মৃত রঞ্জন বিশ্বাসের পুত্র মৎস্য ঘের মালিক ভগিরত বিশ্বাসের স্ত্রী। 

স্বামী ভগিরতের লালসা মেটাতে ঘেরের মাছসহ বিভিন্ন জিনিস দেয়ার লোভ দেখিয়ে ওই প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে ঘেরের পাড়ে নিয়ে যেত স্ত্রী ময়না বিশ্বাস। এভাবেই মৎস্য ঘেরের টোংঘরে প্রতিনিয়ত ধর্ষণের এক পর্যায় অন্ত:সত্ত্বা হয়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হয় ওই প্রতিবন্ধী ছাত্রী। 

অন্তঃসত্ত্বার ৫ মাসের মাথায় একটি মৃতঃ সন্তান প্রসব করে। এ ঘটনা এলাকায় জানা জানি হতে থাকলে ধর্ষক ভগিরতের ভাই অনাথ বিশ্বাসসহ একট চক্র কথিত শালিস মিমাংসার কথা বলে কিছু টাকা নিয়ে উক্ত ঘটনা মিটিয়ে নেয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকে। 

এ ঘটনায় প্রশাসন, এমনকি কোন সংস্থাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে আইনের সহায়তা দিতে এগিয়ে আসেনি। পরে পর্যায় স্থানীয় এক সংবাদ কর্মরা বিষয়টি জানতে পেরে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। এর ফলে পুলিশ নড়ে-চড়ে বসে। 

পরে গত মাসের ৩০ অক্টোবর রাতে প্রথমে ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিবন্ধী ছাত্রীর বাড়িতে যায় অভয়নগর থানা পুলিশ। কিন্তু ঘটনাস্থল মণিরামপুর উপজেলার সীমানায় হওয়ায় ওই রাতেই মণিরামপুর থানা পুলিশ ভিকটিমসহ তার পরিবারকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। পরের দিন ৩১ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারায় ধর্ষক ভগিরত বিশ্বাস এবং সহযোগিতা করার অপরাধে তার স্ত্রী ময়না বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের আজও আটক করতে পারেনি পুলিশ। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মণিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, আসামীদের কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। 

এ ব্যাপারে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির অভিযোগ, ঘটনার পর উক্ত ঘটনা ধামাচাপা দিতে মিমাংসার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিবন্ধী পরিবারকে যারা হুমকী-ধামকী দিয়েছে তারাই পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আসামিদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে অথবা কোন গোপন স্থানে লুকিয়ে রেখেছে।


   আরও সংবাদ