প্রকাশ: ৯ নভেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন
পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ অপরিচিত দুটি প্রাণ একটি বন্ধনের মধ্যদিয়ে সবে মাত্র পরিচিত হতে শুরু করেছে। বাবুই পাখির বাসার নন্যায় ঘর সংসার গুছিয়ে উঠার আগেই সৃতি হয়েছে নব দম্পত্তি লাবু ইসলাম (২৬) ও মুক্তি বেগম (১৯)। দুজনেই পঞ্চগড়েরতেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের ডাকবদলি মাঝিপাড়া এলাকার।
শুক্রবার দুপুরে যাত্রীবাহী বাস ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয় এই দম্পত্তি। দম্পত্তির মৃত্যুতে ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত অক্টোবর তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের ডাকবদলি মাঝিপাড়া এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে লাবু ইসলামের সঙ্গে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের ভেলকুপাড়া এলাকার শরিফুল ইসলামের মেয়ে মুক্তি বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। কেবল জমে উঠতে শুরু করেছে নব দম্পত্তির সংসার জীবন। লাবু পেশায় করাত কলের শ্রমিক।
শুক্রবার দুপুরে লাবু তার শ্বশুর বাড়ির এলাকায় এক দাওয়াত অনুষ্ঠান যোগ দিতে মুক্তিকে নিয়ে বাড়ি থেকে রওনা হন ইজিবাইকে চড়ে। কিন্তু পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুরমারী এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় তাদের ইজিবাইকটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান লাবুসহ ৫ জন নিহত হয়। তখনো নিঃশ্বাস নিচ্ছিলেন মুক্তি। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সেও মারা যায়। মেহেদি মাখা রঙ্গিন স্বপ্নকে বিয়ের শাড়িতেই নিথর দেহটি ঢেকে রাখা হয়। ওই দুর্ঘটনায় তিন নারীসহ ৭ জন প্রাণ হারায়। সন্ধ্যায় তাদের মরদেহ নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন।
আজ (৯নভেম্বর) শনিবার সকাল ১১.০০ ঘটিকায় মাঝিপাড়া ডাকবদলি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে একই সঙ্গে পাশাপাশি শায়িত করা হয় তাদের।
লাবুর বাবা মজিবর রহমান বলেন, বাবা বেঁচে থাকতে ছেলের লাশ দেখা যে কত কষ্টের যে ছেলে হারায় সেই বোঝে। সুস্থ মানুষগুলো বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে খুব বেশি সময়ও হয়নি মৃত হয়ে ফিরে এলো। এই দৃশ্য সইতে পারছি না। যাদের জন্য আমার ছেলে ও বৌমাসহ সাত সাতটি প্রাণ গেল আমরা তদন্ত করে তাদের বিচার দাবি করছি।
মাঝিপাড়া এলাকার মামুন ফকির বলেন, মাস খানেক আগে তাদের বিয়ে হলো আর আজ তারা দুর্ঘটনায় মারা গেল। সুন্দর এই নব দম্পত্তির মৃত্যু আসলে আমাদের এলাকার কেউ মেনে নিতে পারছে না।
এদিকে এই সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন হাতে আসা মাত্রই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান, পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন।