ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মণিরামপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ


প্রকাশ: ১২ নভেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


মণিরামপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

   

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : মণিরামপুরে ৬ কোটি ৮ লাখ টাকা চুক্তিতে ভবদহ এলাকার বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক নির্মাণে নিম্মমানের ইট-খোয়া, বালু ব্যবহার করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের ক্ষমতাধর এক এসও (তদারকি কর্মকর্তা) কে হাত করে এ কাজের নয় ছয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দরপত্র অনুয়ায়ী কাজের মান ঠিক রাখতে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, সরকার বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনবার্সন প্রকল্পের আওতায় অগ্রাধিবকার ভিত্তিতে যশোরের মণিরামপুর-নওয়াপাড়া-কুলটিয়া সড়কের প্রশস্থকরণসহ পুনবার্সনের উদ্যোগ নেয়। ৫.৪১ কিলোমিটার সড়কে প্রায় ৬ কোটি ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৪’শ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে মেসার্স মতিউর রহমান নান্নু জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে ৬ কোটি ৮ লাখ টাকা চুক্তিতে কার্যাদেশ দেয়ার পর চলতি বছরের ২৮ মার্চ থেকে কাজ শুরু হলেও কাজ শেষ হয়নি এখন পর্যন্ত। 

অভিযোগ উঠেছে দরপত্র অনুযায়ী সড়কের বেজে .৫০ মিলিমিটার এফএম মানের বালু রুলারে কমপ্যাকশন (সন্নিবিষ্ট) করার পর ৪৫০ মিলিমিটার হলেই ৮ ইঞ্চি সাববেজ করে নির্মাণাধীন সড়কের পাশে ভাঙ্গানো পিকেট ( ১নং ইট) ইটের খোয়া দিয়ে ৬ ইঞ্চি ম্যাকাডম করার কথা রয়েছে।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, নির্মানাধীন রাস্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের বালু ও খোয়া। ওই বালু রুলারে কমপ্যাকশন না করেই সড়কের আগের ম্যাকাডমের খোয়া-বালু স্কেভেটর মেশিন দিয়ে ট্রলিতে তুলে দেয়া হচ্ছে। 

সড়কের আরেক প্রান্তে সংশ্লিষ্ট অফিসের ফ্লাড প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজার উপস্থিতিতে ইট ভাটায় ভাঙ্গানো নিম্নমানের খোয়া ট্রাকে এনে ম্যাকাডম করার চিত্র চোখে পড়ে। 

এসব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রেজা বলেন, সব কিছু সংশ্লিষ্ট কাজের এসও ( তদারকি কর্মকর্তা) গাউছুল আজম ভালো বলতে পারবেন। 

কর্মরত শ্রমিক আজহার আলী বলেন, ট্রলিতে তুললেই মিক্সিং হচ্ছে, যা এসও গাউছুল আজমের উপস্থিতিতে ল্যাবটেস্টের পর কাজ করা হচ্ছে। অবশ্য ওই শ্রমিক এ কাজটি সঠিকভাবে করা হচ্ছে না বলে স্বীকার করেন। কিন্তু কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না বলে দাবি করেন এসও গাউছুল আজম। 

তিনি গত ২৬ বছর ধরে একই কর্মস্থলে আছেন। তিনি এতটাই ক্ষমতাধর বনে গেছেন যে, অফিসের সব কিছু তার নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে। বরাবরই তিনি বড় প্রকল্পের এসও’র দায়িত্বও বাগিয়ে নেন। তার ভয়ে বড় কর্তা থেকে অফিসের কর্মচারীরা থাকেন তটস্থ। তার বিরুদ্ধাচরণ করলেই বদলি হতে হয় বলে জানা গেছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।

গাউছুল আজম তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজে দক্ষতার কারণেই দীর্ঘদিন ধরে তাকে এখানে রাখা হয়েছে। 
প্রণব মল্লিক, রঞ্জিত মল্লিক, শহিদুলসহ উপস্থিত একাধিক স্থানীয়দের দাবি, বন্যা হলে সড়কে কোমর পানি উঠে বিধায় নির্মাণে ত্রুটি হলে ভবিষ্যতে তাদেরই ভোগান্তি পোহাতে হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, কাজে অনিয়ম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এ বিষয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ইফতেখার আহম্মেদ বলেন, কোন ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। 

এসময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ থাকায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। 


   আরও সংবাদ