ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী


প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

   

নিউজ ডেস্ক: চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়নের আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী গণঅভ্যুত্থানের শ্রেষ্ঠ সন্তান বিএমএ’র তৎকালীন যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন -এর ২৯তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ আশ্বাস দেন।

২৭ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজের শহীদ ডা. মিলন চত্বরে আয়োজিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম মতিয়া চৌধুরী, শহীদ ডা. মিলনের মহিয়সী জননী সেলিনা আখতার, বিএমএ মহাসচিব ডা. মোঃ ইহতেশামুল হক চৌধুরীসহ অনেকে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।

বক্তব্যের শুরুতে শহীদ ডা. মিলনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি এদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অবদানের ভুয়সী প্রশংসা করেন। মন্ত্রী জানান, দেশের প্রান্তিক জনগণের দোরগোঁড়ায় মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা ও উন্নত বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। এলক্ষ্যে ৮টি বিভাগীয় শহরে ক্যান্সার ও কিডনী হাসপাতাল, হৃদরোগ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। অচিরেই বিপুল সংখ্যক চিকিৎসককে চাকুরীতে পদায়ন ও পদোন্নতি প্রদান করা হবে এবং চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। 

বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, শহীদ ডা. মিলন যে শোষণহীন গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ তার অনেকটাই বাস্তবায়ন হয়েছে । দেশের স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক সাফল্য এসেছে এবং মানুষ দারিদ্র্যতার কবল থেকে মুক্ত হয়েছে।

শহীদ ডা. মিলনের মহিয়সী জননী সেলিনা আখতার ব্যথাতুর হৃদয়ে মিলনকে স্মরণ করেন ও দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার প্রতি সকলের প্রতি আহবান জানান। মিলন যে স্বপ্ন লালন করত তার অনেকটাই বাস্তবায়ন হয়েছে বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন তবে তাঁর হত্যাকারীদের বিচার আজও না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন শহীদ ডা. মিলনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তৎকালীণ বিএমএ’র নেতৃত্বে স্বৈরাচার সরকারের চাপিয়ে দেওয়া গণ-বিরোধী স্বাস্থ্য নীতির বিরুদ্ধে ও চিকিৎসকদের ২৩ দফার দাবীতে যে আন্দোলন সংগ্রাম চলছিল সেখানে মিলনের ব্যাপক অবদান ছিল। অসীম সাহসী মিলন দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ও চিকিৎসকদের ২৩ দফা দাবী বাস্তবায়নে নিজেকে উৎস্বর্গ করে গেছেন। ৯০ পরবর্তী সরকার মিলনের স্বপ্ন বিএমএ প্রণীত চিকিৎসকদের ২৩ দফা দাবীর প্রতি তেমন কোন নজর না দিলেও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে চিকিৎসকদের প্রায় সকল দাবীই বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ দারিদ্র্যতার হাত থেকে মুক্ত হয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত উন্নত বিশ্বের সমপর্যায়ে পৌঁছেছে।

বিএমএ মহাসচিব ডা. মোঃ ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, আমার সহকর্মী, সহযোদ্ধা শহীদ ডা. মিলনের হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছি এবং আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই এই বিচার করতে সক্ষম হবে। নব্বইয়ে স্বৈরাচারী সরকারের দোসররা গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে জনগণের উপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল মিলনের রক্তের বিনিময়ে আমরা তা রুখে দিয়েছিলাম। আজ আবার সেই সকল দোসররা নবরুপে সেই গণবিরোধী নীতি বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছে আমাদের সজাগ থাকতে হবে, এদরে মূলোৎপাটন করতে হবে।

এছাড়াও, শহীদ ডা. মিলনের আদর্শ ও কর্মময় জীবনের উপর আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম- ধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি,  বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বিএমএ সহ-সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, বিএমএ সাবেক মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. কাজী শহিদুল আলম, বিএমএ সাবেক সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. কামরুল হাসান খান, বিএমএ সাবেক মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. এম ইকবাল আর্সলান, বিএমএ সাবেক মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. মোহাম্মদ মুশতাক হোসেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. মোঃ আবু ইউসুফ ফকির, শহীদ ডা. মিলনের সহপাঠী ডা. কামরুল হাসান জায়গীরদার, বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. এইচএম মুস্তাফিজুর রহমান রিজভী ও বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. মোঃ জাবেদ। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকবৃন্দ, বিএমএ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যবৃন্দ সহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশা নেতৃবন্দ উপস্থিত ছিলেন।


   আরও সংবাদ