ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের দায়ে চাচাতো ভাই আটক


প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের দায়ে চাচাতো ভাই আটক

   

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : মণিরামপুরে চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি চক্র কথিত মিমাংসার নামে ক্ষতিগ্রস্থ ওই মেয়ের দরিদ্র পরিবারকে মামলা করতে দেয়নি। 

উক্ত ঘটনা জানার পর মণিরামপুর থানা পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ধর্ষককে আটকসহ ভিকটিমকে উদ্ধার করে মামলা নিয়েছে। ভিকটিমের দরিদ্র পিতা বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে উপজেলার নোয়ালী গ্রামের ওই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়েটি বাড়ির পাশে ভেজা কাপড় শুকাতে দেওয়া কাপড় আনতে যায়। এসময় তার আপন চাচাতো ভাই নির্মাণ শ্রমিক সোহানুর রহমান তাকে মুখ চেপে ধরে পাশ্ববর্ত জনৈক আবুলের মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়। এক পর্যায় তার উপর পাষবিক নির্যাতন চালিয়ে ছেড়ে দেয়ার পর মেয়েটি বাড়িতে ফিরে তার মায়ের সাথে উক্ত ঘটনা খুলে বলে।

এই ঘটনা নিজেদের মধ্যে ঘটেছে মনে করে প্রথম পর্যায় দুই পরিবারের মধ্যে কানাঘুষা চলতে থাকে। এক পর্যায় বিষয়টি এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হতে থাকলে স্থানীয় একটি চক্র ওই মেয়ের পরিবারকে বলে মামলা না করে ধর্ষক পরিবারের নিকট থেকে কিছু টাকা-পয়সা নিয়ে মিমাংসা করে নিতে বলে। কিন্তু সচেতন কিছু ব্যক্তি একে অপরের সাথে উক্ত ঘটনা নিয়ে আলোচনা করে বলেন, ঘটনা যা ঘটেছে তা স্থানীয়ভাবে মিমাংসার যোগ্য নয়। 

এক পর্যায় উক্ত ঘটনা জানার পর গতকাল মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালায় নোয়ালী গ্রামে। এই সময় পুলিশের উপস্থিতি জানতে পেরে ধর্ষক সোহানুর  পাশ্ববর্ত এলাকায় আত্মগোপন করে। 

এসময় পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে উক্ত ঘটনা মিমাংসা করে দেয়ার কথা বলে স্থানীয়দের মাধ্যমে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি ভিকটিমকে উদ্ধারসহ তার দরিদ্র পরিবারকে থানায় আনা হয়। 

এ ঘটনায় রাতে ক্ষতিগ্রস্থ ওই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর পিতা বাদী হয়ে নারী ও শিশু দমন আইনের ৯(১) ধর্ষণের ধারায় মামলা দায়ের করেন। যার মণিরামপুর থানার মামলা নং ১৭। তারিখ-২৮/১১/২০১৯ ইং। 

থানার ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, শুক্রবার ধর্ষক সোহানুরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা করা হয়েছে উপজেলার রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তারিকুল ইসলামকে। 

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামে মামার বাড়িতে কালিপূজা দেখতে এসে ডুমুরিয়ার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক স্কুল ছাত্রী (১২) ধর্ষণের শিকার হয়। 

এছাড়া অভয়নগর উপজেলার কালিশাকুল গ্রামের দরিদ্র পরিবারের অপর এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্রী (১৩) কে মণিরামপুর উপজেলার কপালিয়া এলাকায় নিজ স্ত্রীর সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে মৎস্য ঘের মালিক ভগিরত বিশ্বাস। ভগিরত বিশ্বাসের প্রতিনিয়ত ধর্ষণে ওই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্রী ৫ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে মৃত সন্তান প্রসব করে। এ দুটি ঘটনায়ও মণিরামপুর থানায় মামলা হয়েছে।


   আরও সংবাদ