ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ ভাদ্র ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজ বাসচাপায় নিহত রাজীব-দিয়ার মামলার রায়


প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


আজ বাসচাপায় নিহত রাজীব-দিয়ার মামলার রায়

   

নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়ার নিহতের ঘটনায় করা মামলার রায় আজ রবিবার।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করবেন।

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার দিন ১ ডিসেম্বর ধার্য করেন আদালত। এ মামলায় ৪১ জনের মধ্যে ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে বাসচাপায় নিহত হন শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। আহত হয় আরও ১০-১৫ শিক্ষার্থী।

ঘটনার দিনই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন।

২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

২৫ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন।

এই মামলার আসামিরা হলেন জাবালে নূর পরিবহনের মালিক জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের সহকারী এনায়েত হোসেন।

জাবালে নূর পরিবহনের আরেক মালিক শাহাদাত হোসেন জামিনে রয়েছেন। তার পক্ষে মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। চালকের সহকারী কাজী আসাদ এখনও পলাতক।

দুর্ঘটনার এক বছর চার মাস একদিন পর এ রায় হচ্ছে। বেপরোয়া বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ওই ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেন। সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে উৎসাহিত করেন।

একই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধেও অবস্থান নেন। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অনেকটা তৎপর হয়।

জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনা করা হয়েছে।

সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ সক্ষম হয়েছে। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।

নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীমের মা রোকসানা বেগম বলেন, আমার মেয়ে যদি রাস্তা পার হওয়ার সময় অ্যাক্সিডেন্ট (দুর্ঘটনা) হতো, তা হলে মনে এতটা দুঃখ থাকত না। মনে করতাম, হয়তো আমার মেয়েরই ভুল ছিল।

হয়তো মেয়েই দেখে রাস্তা পার হতে পারেনি। কিন্তু আমার মেয়ে গাড়িতে ওঠার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিল। যেখান থেকে যাত্রীরা গাড়িতে ওঠে, সেখানেই দাঁড়িয়েছিল। ড্রাইভারটা যদি একটু সাবধানে গাড়ি চালাত, তা হলে আমার মেয়ে মারা যেত না। আদালতের কাছে আমরা ন্যায়বিচার প্রার্থনা করি।

মামলার আসামিরা হলেন জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং দুই চালকের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ।

এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসটির চাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যান।

আসামিদের মধ্যে কাজী আসাদ পলাতক রয়েছে। আর আসামি শাহাদাত হোসেনের পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় তার অংশ বাদ দিয়ে বিচার কার্যক্রম চলেছে।

বাকি চার আসামি কারাগারে আছেন। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ৪১ সাক্ষীর মধ্যে শিক্ষার্থী, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।


   আরও সংবাদ