ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

‘মানব কুকুর’ সেজে পারফর্মিং আর্ট : শিল্পীদের দুঃখ প্রকাশ


প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


‘মানব কুকুর’ সেজে পারফর্মিং আর্ট : শিল্পীদের দুঃখ প্রকাশ

   

নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর হাতিরঝিলে ‘মানব কুকুর’ সেজে পারফর্মিং আর্ট করায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এর শিল্পীরা। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও তারা মৌখিক ও লিখিতভাবে জানান। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে তারা দুঃখ প্রকাশ করেন।

এই দুই শিল্পী হলেন- আফসানা হাসান সেঁজুতি ও টুটুল চৌধুরী। সেঁজুতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেইন্টিং ও ড্রয়িংয়ের শিক্ষার্থী।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) তেজগাঁও বিভাগের পুলিশের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়।

পোস্টে বলা হয়, হাতিরঝিলের মতো জনাকীর্ণ উন্মুক্ত স্থানে প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ এবং হাতিরঝিল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী এ ধরনের পারফর্মেন্স কেন করা হলো’- তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদারের এমন প্রশ্নে তারা দুঃখপ্রকাশ করেন। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানান। একই সঙ্গে তাদের পারফরমেন্সের ড্রেসআপ ও রুচিবোধ নিয়ে কঠোরভাবে ভৎসনাও করা হয়।

পোস্টে আরও বলা হয়, ২৮ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাতিরঝিলে একজন পুরুষের গলায় দড়ি বেঁধে তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এক নারী। ভিডিওটি দেখে অনেকেই ফেসবুকে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ভিডিওটি বিপ্লব বিজয় তালুকদার নজরে আসামাত্রই তিনি ঐ পুরুষ ও নারীকে সনাক্ত করে তার কার্যালয়ে তলব করেন।

এরপর ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় টুটুল ও সেঁজুতি উপ-পুলিশ কমিশনার (তেজগাঁও বিভাগ) এর কার্যালয়ে হাজির হন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা মৌখিক ও লিখিতভাবে জানান, গত ২৫ ডিসেম্বর বিকালে হাতিরঝিল থানাধীন রামপুরা ব্রিজ এলাকায় তারা দুজন একটি স্ট্রিট আর্ট পারফরমেন্স করেন। যা আসলে ১৯৬৮ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ভেল্যি এক্সপোর্ট ও পীটার ওয়েভেলের ‘From the Portfolio of Doggedness’ পারফরমেন্সের পুনরাবৃত্তি।

তাদের পুনরাবৃত্তি পারফরমেন্সের মূল প্রতিবাদ্য ছিল- কালের যাত্রায় মানুষ অগ্রসর হচ্ছে। সে অগ্রযাত্রার ঊর্ধ্বমুখী চলন হিসেবে একজন শিল্পী সামাজিক উপাদান মানুষ ও সভ্যতার ধ্রুবক। অন্যজন আঙ্কিত, অনুসরনরত এবং শীতের প্রকটতায় নিজেকে মানিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

এই পারফরমেন্স এক ঘণ্টাব্যাপী করার পরিকল্পনা করলেও হাতিরঝিল পুলিশের বাঁধার মুখে ১০-১৫ মিনিট পরে পারফরমেন্স শেষ না করেই তারা হাতিরঝিল ত্যাগ করেন। এসময় হাতিরঝিলে আগত দর্শনার্থী ও পথচারীদের কেউ তাদের সেই দৃশ্য ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। ফলে তাদের মূল পারফরমেন্স না দেখে দর্শনার্থী ও পথচারী কর্তৃক ধারণকৃত ও পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টকৃত অবাঞ্ছিত দৃশ্য দেখে তাদের সম্পর্কে জনসাধারণের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, ঐ পারফর্মিং আর্টের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে এটিকে বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী বলে মন্তব্য করেন। এরপরই সেঁজুতি ও টুটুল চৌধুরীর দুঃখ প্রকাশের খবর এল।


   আরও সংবাদ