ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সৈয়দ আশরাফের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের শ্রদ্ধা


প্রকাশ: ২ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


সৈয়দ আশরাফের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের শ্রদ্ধা

   

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুই মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক এবং জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের জ্যেষ্ঠ সন্তান সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শুক্রবার (৩ জানুয়ারি)। ২০১৯ সালের এই দিনে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬৮ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

বাবার মৃত্যুর পর প্রবাস জীবন বেছে নেওয়া সৈয়দ আশরাফ দেশে ফিরে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। আমৃত্যু তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করেছেন।

সৈয়দ আশরাফের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ।

সৈয়দ আশরাফ ১৯৫২ সালে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।

পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর প্রবাস জীবন বেছে নেন সৈয়দ আশরাফ। তবে যুক্তরাজ্যেও তিনি আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফ। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে না পারলেও সৈয়দ আশরাফ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। 

২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করলে সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী সৈয়দ আশরাফও টানা দ্বিতীয় মেয়াদে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। পরে ২০১৬ সালে তাকে প্রথমে দফতরবিহীন মন্ত্রী ও পরে জনপ্রশাসনমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এর আগে, ২০০৯ সালের কাউন্সিলের প্রথমবারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১২ সালের জাতীয় কাউন্সিলেও দ্বিতীয় মেয়াদে একই দায়িত্ব বহাল থাকে তার ওপর। ২০১৬ সালের কাউন্সিলে তিনি নিজেই ওবায়দুল কাদেরের নাম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রস্তাব করেছিলেন। ওই কাউন্সিলে তাকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এদিকে, শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ না নিতে পারলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ সদর থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। নির্বাচনে জয়ও পান তিনি। বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।

 শপথ গ্রহণের জন্য সময় চেয়ে তিনি স্পিকার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত আর পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে পারেননি তিনি। শপথ গ্রহণের দিনই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পরে তার আসনে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তার ছোট বোন সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি।


   আরও সংবাদ