ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ ভাদ্র ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আরিফ হত্যার মূলহোতা হারুনসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১


প্রকাশ: ৩ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


আরিফ হত্যার মূলহোতা হারুনসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১

   

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর উত্তরা থেকে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন চান্দনায় চাঞ্চল্যকর আরিফুল ইসলাম আরিফ হত্যার মূলহোতা হারুন হোসেন অন্তরসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১।

শনিবার (০৪ জানুয়ারি) সকালে র‍্যাব-১'এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শাফী উল্লাহ বুলবুল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২২ ডিসেম্বর গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন চান্দনা পূর্ব পাড়া, সার্ডি রোডে সেন্ট সোয়েটারের পিছনে বাগানবাড়ী নামক স্থানে মাদক ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার ও পাওনা টাকার জের ধরে ভিকটিম আরিফুল ইসলাম আরিফ নামক একজন ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপযুর্পরি আঘাত করে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সাবিনা আক্তার (২২) বাদী হয়ে গাজীপুর এর বাসন থানায় একটি মামলা করে।

এ চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়, হারুন (২৫), শামীম (২৫), মুন্না (২৮), আল আমীন (২৫), বাবু (৩০), ইয়াসিন (২৬), আক্তার (২৭), ইমন হোসেন বুলেট (২০), সাথী (৩৭) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে, যার নম্বর-৪০/৫১১ ধারা- ৩৬৪/৩৮৫/৩৮৬/৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০।

হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। যার প্রেক্ষিতে র‍্যাব-১ তাৎক্ষণিকভাবে হত্যাকারী খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুর“ করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

গতকাল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-১ জানতে পারে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন সেক্টর নং-০৫, রোড নং- ০২/এ এর ১৩ নং বাসায় হত্যাকারীরা অবস্থান করছে এর প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হারুন হোসেন অন্তর (২৪), জাফর আহম্মেদ শামীম (২৩) ও আল-আমীন (২৬) কে গ্রেফতার করে। 

প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম আরিফুল ইসলাম আরিফ ও আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সদস্য। এদের মধ্যে ভিকটিমের সাথে হারুনের সখ্যতা বেশি। তারা একে অপরের সাথে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করে আসছে। ঘটনার দুই মাস পূর্বে ভিকটিম আরিফ ও তার মাদক ব্যবসায়ের সহযোগী বাবু মাদক ব্যবাসায়ের পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে হারুনকে মারধর করে। এরই মধ্যে আরিফ বাবুদের দল ছেড়ে নিজেই মাদক ব্যবসা শুরু করে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মাদক ব্যবসার আধিপত্য ও টাকা পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে আরিফকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে গুর“তর রক্তাক্ত জখম করলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। 

হারুন হোসেন অন্তরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আজমপুর ফুটপাতে গার্মেন্টস পণ্য ভ্যানে করে বিক্রয় করে। সে গার্মেন্টস পণ্য বিক্রয়ের সাথে পাশাপাশি মাদক ব্যবসা করে আসছে। ভিকটিমের সাথে মাদক ব্যবসা করার ফলে তাদের মধ্যে খুব ঘটিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এলাকায় কাউন্সিলের কথায় হারুন মাদক ব্যবসা কমিয়ে দিতে চাইলে তাদের মধ্যে দুরাত্ব সৃষ্টি হয়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঘটনাস্থলে ডেকে পাঠায় এবং তার সহযোগী অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় ভিকটিমকে বেধড়ক মারধর করে বলে স্বীকার করে। 

জাফর আহম্মেদ শামীম উচ্চ মাধ্যমিক ১ম বর্ষ পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। বর্তমানে সে কিছুই করে না। ধৃত আসামি হারুনের বন্ধু এবং তার এক সাথে মাদক ব্যবসা করত। ঘটনার দিন হারুন শামীমকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ওয়ারলেছ নামক স্থানে আসতে বলে।

আল-আমীন (২৬)’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, সে এলাকায় পোল্ট্রি মুরগির ব্যবসা করে। সে এক সময় আরিফের সাথেই মাদক ব্যবসা করত। পরবতর্ীতে সে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিলে আরিফের সাথে দুরত্ব তৈরী হয়। ধৃত আসামীকে বিভিন্ন সময় আরিফ তাকে নানাভাবে হেনস্থ করত বলে জানায়। এক পর্যায়ে তারা সকলে মিলে আরিফকে বেধড়ক মারপিট করে গুর“তর জখম করে বলে ধৃত আসামী স্বীকার করে।


   আরও সংবাদ