ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বাবাকে জানি না রাস্তায় চলতে চলতেই পেয়ারা বিক্রেতা হয়েছি : সাফির


প্রকাশ: ৪ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


বাবাকে জানি না রাস্তায় চলতে চলতেই পেয়ারা বিক্রেতা হয়েছি : সাফির

   

স্টাফ রিপোর্টার : পথচারী বাসের যাত্রীদের ক্লান্তি ক্ষুধা দূর করার লক্ষ্যে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবিরাম রাজপথে শিশুসহ তরুণ-তরুণীদের প্রতিদিনের চিত্র এটাই। রাজধানীর বিভিন্ন রোডে জীবিকার সন্ধ্যানে ছুটে চলা রাজিব, রায়হান সাফিদের হাতে একটি প্লেট। তার মধ্যে সাজিয়েছে বৈড়র চাটনি, আমড়ার ফালি আর পেয়ারার ফালি।

ছোট ছোট পলিতে সঙ্গে একটি ছোট সুরো বাঁশের পলিসি করা কাঠি। অনেকে আবার এই ছোট্ট কাঠিটি দাঁতের খিলাল হিসাবে ব্যবহার করেন। 
সাফি (১৪) একজন পেয়ারা বিক্রেতা কথা হলে জানালেন, কে বাবা জানি না তৈ মাই থাকে রমনাপার্ক। সেখানেই আমার জন্ম। প্রতিদিন  সকাল হলে আড়ংয়ের পিছনে থেকে প্রতি প্যাকেট পেয়ারা মালিক ৫টাকা দরে আমাদের দেন। আমরা ২০ জন আসাদগেট থেকে সংসদ ভবণের দক্ষিণের রাস্তায় গাড়ি থামলেই জ্বানালার পাশে বসে থাকা যাত্রীদের সামনে এগিয়ে গিয়ে হাঁকডাক শুরু করি। প্রতি প্যাকেট পেয়ারা ,  আমড়া, বড়ৈ বিক্রি করি।

প্রশ্ন বলে আমার মতো হাজার হাজার ছেলে মেয়ে আছে এই রাজধানীতে যাদের অনেকের ই জানা নেই কে তার বাবা ! এক সময় বিরক্তির সুরে বললো জানতো পেয়ারা বিক্রি করতে না পারলে সারাদিন রাত না খেয়ে থাকতে হবো। উত্তরে বললাম আমি আজ তোমাকে খাবার টাকা দেবো। 

প্রতিত্তোরে গর্জে উঠলো ওরা চার পেয়ারা বিক্রেতা। এই সংসদ ভবণ দেখছেন এখানে ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ হয়। আমাদের ভাগ্য উন্নয়নে অনেক কথা বলে কিন্ত আঙুর কাছে থেকে এক প্যাকেট পেয়ারা আমড়া কিনে না। কেনো কিনে না জানেন? বললাম না জানি না। রাজিব বলে আফা অনেক উপঢৌকন আসে ফল তাগোরে বাসায়। 

সপ্তাহে পাচদিন রাস্তায় চলন্ত বাস প্রাইভেট কারের এবং পথোচারী নিকট ফেরি করে বিক্রি করে যা আসে অর্ধেক মহাজনকে দিয়ে বাকীটা নিয়ে চলে যাচ্ছে বেশ। সপ্তাহের দুই দিন সাকিব খানের ছবি দেখি শ্যামলী সিনেমা হলে। আর ঘুরে ফেরা, মন চাইলে মায়েরে দেইখা আসি।

রায়হানের দাবি আমাদের দায়িত্ব যেমন জন্মদাতা নেয়নি তেমনি অভাবের কারণেই মায়ে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তবে একদিন মায়ে কৈছিলো এক সাহেব না-কি মায়েরে চন্দ্রীমার সামনে থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। আবার গাড়িতে করে রাতেই নামিয়ে দিয়ে যায় মায়ের হাতে ২ হাজার টাকা দিয়ে! আমি না-কি পৃথিবীতে আইছিলাম, এই আমার বাবার পরিচয়।


   আরও সংবাদ