ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ ভাদ্র ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

দ্বিতীয় বারের মত বিপিএম পদক পেলেন এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী


প্রকাশ: ৪ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


দ্বিতীয় বারের মত বিপিএম পদক পেলেন এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী

   

স্টাফ রিপোর্টার : দ্বিতীয় বারের মত পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম (সাহসিকতা) পেয়েছেন র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী। আত্মঘাতী নারী জঙ্গি দলের তিন সদস্যসহ দুর্ধর্ষ ১৯ জঙ্গিকে গ্রেফতার, রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে পাসপোর্ট তৈরিতে সহযোগিতার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেফতার এবং অবৈধ মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ ভূমিকা রাখায় তিনি এই পদকে ভূষিত হয়েছেন।

রোববার (৫ জানুয়াির) পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশের এলিট ফোর্স র্যািপড অ্যাকশান ব্যাটেলিয়ান (র‍্যাব)'এর এই কর্মকর্তাকে পদক পরিয়ে দেন। এর আগে মহিউদ্দিন ফারুকী ২০১৫ সালে পিপিএম সেবা ও ২০১৭ সালে বিপিএম সাহসিকতা পদক পেয়েছিলেন।

সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পুলিশ সপ্তাহে পদক দেওয়া হয় যা বিপিএম এবং পিপিএম নামে পরিচিত। প্রথমটি বাংলাদেশ পুলিশ পদক এবং পরেরটি রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক। মহিউদ্দিন ফারুকী পেয়েছেন বিপিএম সাহসিকতা পদক।

গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের কারণে এবার এই দুই ক্যাটাগরীতে পদক পেয়েছেন ১১৮ জন কর্মকর্তা।

পদকপ্রাপ্তির পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মহিউদ্দীন ফারুকী বিএননিউজকে বলেন, ‘আগেও দুবার পদক পেয়েছি। তবে দ্বিতীয়বারের মতো সাহসিকতা পদক পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এতে কাজের উৎসাহ উদ্দীপনা আরো বাড়বে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক পেয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিত র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া এটা সব চেয়ে বড় আনন্দের। যেটা আমার কাছে সবচেয়ে বড় অর্জন মনে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক পাওয়ার পর মনে হয়েছে আমরা দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। আর সেটা প্রমাণ করে দেখাতে হবে। বিশেষ করে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে আরও অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।

গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মহিউদ্দীন ফারুকীর নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তাকারী প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে আটক করা হয়। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার বিনিময়ে এক একটি জন্মসনদ করে দিতো এই চক্রটি। এজন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা মাঈনুদ্দিন আহমেদ তাকে সহযোগিতা করতেন। মাঈনুদ্দিনের কাছ থেকে প্রাপ্ত জন্মসনদের জাতীয় সার্ভারের নাম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে জন্মসনদ বের করা হতো। এসময় পাসপোর্ট তৈরির জন্য ভুয়া জন্মসনদ, কাউন্সিলরের সিল, সরকারি দপ্তরের সিল, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ অবৈধ লেনদেনের দুই লাখ ৩০ হাজার নগদ টাকা জব্দ করা হয়।

২০ মে শ্রীমঙ্গল থেকে ৮-৯ টন চা পাতা ভর্তি কাভার্ড ভ্যান ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার হাজারীবাগের মধুসিটির সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ছিনতাইকারী নিহত হন। এর মধ্যে এক ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে ২১টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

প্রেমের ফাঁদে ফেলে জঙ্গি বানানোর অভিযোগে তিন নারী জঙ্গিসহ আনসার আল ইসলামের সক্রিয় ১৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আলোচনায় আসেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা। এছাড়া রাজধানীর নিউমার্কেট, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি চক্রের দৌরাত্ম কমাতে অভিযান চালান তিনি। এতে বেশ কয়েকজন চিহিৃত ছিনতাইকারী র‌্যাবের অভিযানে মারা যায় এবং আটক হয়।

২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত অভিযানে ১৮৩ জন মাদক ব্যবসায়ী আটক, দেড়লাখ পিস ইয়াবা ও পাঁচ হাজার বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।


   আরও সংবাদ