ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রতীতি দত্তের ইচ্ছায় মৃতদেহটি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে দান করা হয়


প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


প্রতীতি দত্তের ইচ্ছায় মৃতদেহটি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে দান করা হয়

   

ঢাবি প্রতিনিধি : বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের যমজ বোন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আরমা দত্তের মা প্রতীতি দেবী মারা গেছেন।

রোববার (১২ জানুয়ারি) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তিনি শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পুত্রবধূ এবং মহাশ্বেতা দেবীর পিসি।

প্রতীতি দেবীর মৃত্যুর খবরটি তাঁর মেয়ে আরমা দত্ত নিশ্চিত করেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রতীতি দেবী।

এদিকে, প্রতীতি দত্তের ইচ্ছা অনুযায়ী মৃত্যুর পর তার মৃতদেহটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করেন। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় আরমা দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান ডাঃ খন্দকর মানজারে শামীমের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে মৃতদেহটি প্রদান করেন।

এসময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া এবং প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ সৈকত আশিক উপস্থিত ছিলেন।

মৃতদেহ গ্রহনকালে এনাটমি বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান ডাঃ খন্দকর মানজারে শামীম বলেন, মৃত্যুর পর তার মরাদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগে সংরক্ষণ, শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ, গবেষণায় যথোপযুক্ত ব্যবহার করা হবে।

প্রতীতি দেবী ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর পুরোনো ঢাকার হৃষীকেশ দাস রোডের এক বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। ঋত্বিক ঘটক আর প্রতীতি দেবী ঘটক জন্মেছেন পাঁচ মিনিটের অনুজ সহোদরা হিসেবে। 

সে সময় যমজের ডাকনাম রাখা হয় ভবা ও ভবি। ভবা হচ্ছেন ঋত্বিক, ভবি হচ্ছেন প্রতীতি দেবী। তাঁদের বাবা সুরেশ ঘটক ছিলেন তৎকালীন ঢাকার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট।

পরিবারের অধিকাংশ ব্যক্তি অনেকের মতোই বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু পরে নিজের দেশে ফিরে আসেন প্রতীতি। তাঁর বিয়ে হয় ভাষা সংগ্রামী ও পূর্ব পাকিস্তানের মন্ত্রী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পুত্র সঞ্জীব দত্তের সঙ্গে। পুত্র রাহুল দত্ত ও কন্যা আরমা দত্তকে নিয়ে বাংলাদেশেই তিনি থেকে যান। মাঝে কিছুদিন আগরতলা, কলকাতা ও পন্ডিচেরিতে তিনি অবস্থান করেছিলেন। কিন্তু নিজের মাটিকে ছেড়ে যাননি। তাঁর চোখের সামনে ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ কুমিল্লার নিজ বাসভবন থেকে পাক হানাদার বাহিনী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও তাঁর ছোট ছেলে দিলীপ কুমার দত্তকে ধরে নিয়ে যায়।

বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও বাংলাদেশ গড়ে ওঠার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছে প্রতীতি দেবীর পিতৃগৃহ ও শ্বশুরবাড়ির পরিবার। তিনি নিজেও নানা সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।


   আরও সংবাদ