ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

লাখ টাকার ফাঁদে কোটি টাকার প্রতারণা


প্রকাশ: ৩ জুলাই, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


লাখ টাকার ফাঁদে কোটি টাকার প্রতারণা

   

অভিনব এক প্রতারক চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ইতোমধ্যে এ চক্রের দুই হোতাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে ভাল চাকরির লোভ দেখিয়ে পাঠানোর নামে দীর্ঘদিন ধরে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।

আজ বৃহস্পতিবার সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটনের (দক্ষিণ) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান জানান, আমেরিকায় লোক পাঠানোর নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক চক্রটি। ছাত্র, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম পর্যন্ত টার্গেট করতো তারা।

সিআইডি জানায়, মিরপুরের একটি জুতার শোরুমে একজন ক্রেতা আসেন। দামি ব্র্যান্ডের ৩৮ লাখ টাকার জুতার অর্ডার করেন একজন। একসঙ্গে এতো টাকার জুতা কিনতে দেখে আগ্রহ জাগে শোরুমের ম্যানেজারসহ অন্যদের। জানতে পারেন- ক্রেতা একজন আমেরিকা প্রবাসী। সেখানে তার বড় রেস্টুরেন্টসহ অনেক ব্যবসা রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ থেকে তিনি জনবল নিচ্ছেন। ৫০ জনের একটি গ্রুপ আমেরিকা যাচ্ছে। তাদের জন্যই এই জুতা কেনা হচ্ছে। শোরুমের ম্যানেজার আগ্রহী হয়ে আমেরিকা প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি এসব বলেন।

কথায় কথায় শোরুমটির ম্যানেজার শেখ ফুয়াদকে আমেরিকা প্রবাসী বলে পরিচয় দেওয়া আলতাফ হোসেন জানায়, দেশে মামলা থাকায় ৫০ জনের মধ্যে তিনজন হয়তো আমেরিকার ভিসা পাবে না। ফলে আরও তিনজন লোক দরকার। যারা আমেরিকা যেতে চায়। ৫০ হাজার টাকা ও আনুষঙ্গিক কিছু টাকা খরচ হবে এতে। এই কথা শুনে আমেরিকা যাওয়ার জন্য আগ্রহী হন শেখ ফুয়াদ। প্রথমে ৫০ হাজার, পরবর্তীতের ২০ হাজার এভাবে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন আলতাফ হোসেনকে। আজ ফ্লাইট, কাল হবে, গাড়ি পাঠাচ্ছি এসব নানা অজুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপণ করে আলতাফ হোসেন। এভাবে কিছুদিন চলার পর প্রায় আট মাস ধরে ফোন বন্ধ করে লাপাত্তা আলতাফ।

আলতাফ হোসেন মূলত একজন প্রতারক। তার সঙ্গে জড়িত রয়েছে আরও অন্তত ১০ জন। আমেরিকায় লোক পাঠানোর নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। গতকাল বুধবার বাড্ডার সাঁতারকুল থেকে আলতাফ হোসেন ও তার সহযোগী শরীফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

ঢাকা মেট্রোপলিটনের (দক্ষিণ) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান আরও জানান, কারও সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগে আলতাফ নিজেকে অনেক টাকার মালিক সেটা বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করতো। দামি গাড়ি, দামি কাপড়, জুতা এবং টার্গেট ব্যক্তিদের সঙ্গে পাঁচতারকা হোটেলে মিটিং করতো।

তিনি বলেন, আলতাফ নিজে কখনও দেশের বাইরে যায়নি এবং কাউকে বিদেশে পাঠায়নি। বিদেশে পাঠানোর নামে কৌশলে টাকা আদায় করতো সে। পরে সময় সুযোগ বুঝে গা ঢাকা দিতো। এই চক্রটির সঙ্গে আরও ১০ জনের মতো জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির এই বিশেষ পুলিশ সুপার।


   আরও সংবাদ