ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ ভাদ্র ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ঢাবিতে শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতন, সকালে পুলিশে সোপার্দ


প্রকাশ: ২১ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


ঢাবিতে শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতন, সকালে পুলিশে সোপার্দ

   

ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাবিতে সন্দেহভাজন চার শিক্ষার্থীদের রাতভর নির্যাতনের পরে পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রসংসদ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে জুহুরুল হক হলের গেস্টরুমে  বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুকিম চৌধুরীকে শিবির সন্দেহে গেস্টরুমে ডাকা হয়। সেখানে হল শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা তাদের অনুসারীদের দিয়ে মুকিমকে প্রথমে মানসিক চাপ দেয়। এতে স্বীকার না করায় তাকে লাঠি, স্টাম্প ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। পরে তার ফোনের চ্যাটলিস্ট দেখে রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেনকে গেস্টরুমে আনা হয়।

সেখানে তাকেও বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগের নেতারা।  এরপর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন ও একই বর্ষের আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীনকে ধরে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে রাত দুইটা পর্যন্ত তাদের ওপর বিভিন্ন নির্যাতন করতে থাকে ছাত্রলীগ নেতারা।

পরে রাত ২টার পর তাদেরকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। 

ছাত্রলীগের নেতারা দাবি করে তাদের কাছ থেকে শিবির সংশ্লিষ্ট বই উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তার কোন নাম অথবা প্রমাণ দিতে পারেন নি তারা।  

শিবির সন্দেহে তাদেরকে গেস্টরুমে ডাকা হলেও তাদের কাছে শিবিরের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ বের করতে পারেনি ছাত্রলীগ।   

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজার কে ফোন দিলে তাদের নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু্ল হাসান বলেন, 'গতরাতে পুলিশি হেফাজতে আনার পর তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর পূণরায় তাদেরকে থানায় নিয়ে আসা হয়।

শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান আরো জানান, ৩ জন ছাত্রকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অপর জনের অভিভাবক আসলে তাকেও তার পরিবারের হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু কেনো তাদেরকে থানায় ধরে আনা হলো এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি তিন

এ বিষয়ে জহুরুল হক হলের হল প্রভোস্ট দেলোয়ার হোসেনকে ফোন দিলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান। 

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি (সহ-সভাপতি) নুরুল হক নুর বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। শুনেছি ছাত্রলীগ তাদের মেরেছে। ছাত্রলীগ তাদের মারার কে বলে প্রশ্ন তুলেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা হল প্রশাসনের মাধ্যমে এ বিষয়ে অবহিত হয়েছি। ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যদি ওই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়, তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর যদি কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া না যায় তাহলে তাদেরকে কোনো ধরনের হয়রানি করা যাবে না।


   আরও সংবাদ