প্রকাশ: ২১ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন
গাজীপুর থেকে এম রানা : উচ্চ আদালতের নির্দেশেকে অমান্য করে গাজীপুর সিটির বিভিন্ন এলাকায় এখন পর্যন্ত চলছে অবৈধ ইটভাটা। অথচ হাইকোর্ট এসব অবৈধ ইটভাটাগুলো পনের দিনের সময় উল্লেখ করে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পনের দিনতো দূরের কথা দেড় মাসেও বন্ধ হয়নি ইটভাটাগুলো।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম সরকার ম্যাজিস্ট্রেট না পাওয়ার অজুহাতে নিরব রয়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নগরীর কাশিমপুর হাতিমারা এলাকায় দুলাল মন্ডল ও আব্দুল মজিদ মন্ডল দুই ভাই এর মালিকানা (পি.বি.সি.) পল্লী ব্রিক্স কোম্পানি, গাছা পলাশনার আবুল হোসেন মালিকানাধীন (শাপলা ও পি.বি.সি) দুইটি ব্রিক্স ও সিটির ২১নং-ওয়ার্ড কাউলতিয়া এলাকার বহিরাতলায় আব্দুল্লা মুসল্লির (এম বি আই), খায়রুলের (কে টি বি) ব্রিক্স, হারুন অর রশিদের (এ এ এ) ব্রিক্স, আলমের (বি বি আই), আব্দুল হালিমের (এ টি বি) ও লোকমান হোসেনের (আর বি এল) ইটভাটায় অবৈধভাবে আগুন জ্বলছে।
মালিক পক্ষ বিভিন্ন অজুহাতে যুক্তি দেখিয়ে বার বার হাইকোর্টে রিটপিটিশন করে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে এসব ইটভাটা প্রস্তুত করে আসছে। গেল মাসেই ঢাকা, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জসহ আশের-পাশের সকল অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেন হাইকোর্ট।
এ নির্দেশনা পেয়েই পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশকয়েকটি ইটভাটা ভেঙে দেন এবং সেই সঙ্গে অর্ধকোটি টাকার বেশি জরিমানাও করেন। ভুক্তভোগি নগরবাসিন্দারা পরিবেশ দূষণের ব্যাপারে বার বারঅভিযোগ করে আসলেও মালিক পক্ষ ভাটা চালাতে মরিয়া হয়ে সুপ্রিমকোর্টে আবারো একটি আবেদন করেন।
জানা গেছে, চলতি মাসেই তা সুপ্রিমকোর্ট খারিজ করে দেন। নগর বাসিন্দাদের অভিযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকা ও ফসলি জমি ধ্বংস করে কিছুসংখ্যক ভাটা মালিকরা লাভবান হচ্ছে তবে পরিবেশ বলতে গাজীপুরে কিছুই নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর বসে বসে ঘুমায় আর পকেট তাজা করেন।
পত্রিকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার এক ভাটা মালিক বলেন, আমরাতো সিটির বাহিরে ইটভাটা প্রস্তুত করে আসছি। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশ থাকার পরেও সিটির ভিতরে এখন পর্যন্ত কিভাবে ইটভাটা চলে ? পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম সরকারকে না কি মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েই শাপলা ইটভাটা চালাচ্ছেন এমন অভিযোগ মালিক পক্ষের।
সূত্রে আরো জানায়, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকেই না কি হাইকোর্টের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। নিজেকে একজন ভাটা মালিক পরিচয় দিয়ে শাপলা ব্রিক্সের মালিক আবুল হোসেনর মোবাইল ফোনে পরিবেশ অধিদপ্তরকে উৎকোচ দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, দিছি অল্পই দিছি, কারখানাবাজার-থ্যাও দিছিল, দেওয়ার পরেও হেগোডা ভাঙছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম সরকার অস্বীকার করেন।