ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অন্তর্বর্তীকালীন চার আদেশে রোহিঙ্গা কলোনীতে প্রশান্তি


প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


অন্তর্বর্তীকালীন চার আদেশে রোহিঙ্গা কলোনীতে প্রশান্তি

   

স্টফ রিপোর্টার : মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) গণহত্যা কনভেনশনের অধীনে ১১ নভেম্বরে মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া। ওই মামলা চলাকালীন আদালতের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের জন্য পালনীয় অন্তর্বর্তীকালীন চার আদেশকে, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্বাগত জানিয়েছেন বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার (হোস্ট কমিউনিটি) সচেতন মহল।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) আইসিজে’তে অন্তর্বতীকালীন আদেশ ঘোষণার পূর্বনির্ধারিত তারিখ থাকায়, বুকভরা আশা নিয়ে অপেক্ষায় ছিল ওই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা জনগোষ্ঠী। কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অনেককেই রেডিও, টিভি ও মোবাইল ফোনে খবর নিতে দেখা গেছে। স্থানীয় সময় বিকালে অন্তর্বতীকালীন আদেশ ঘোষণা শেষ হওয়ার পর বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা উল্লসিত প্রতিক্রিয়া জানায়। পাশাপাশি তারা নিজেদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি করার দাবিও করে।

হোস্ট কমিউনিটির প্রতিনিধিরা সারাবাংলাকে জানান, আইসিজের ওই চার আদেশের প্রেক্ষিতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে স্বদেশে প্রত্যাবাসিত হওয়ার পথ সুগম হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের ব্যাপারে হোস্ট কমিউনিটির পক্ষ থেকে ব্যারিষ্টার আবুল আলা ছিদ্দিকী সারাবাংলাকে জানান, আইসিজের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে রাখাইনে মিয়ানমারের গণহত্যা চালানোর বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেল। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আন্তজাতিক আদালত এই মামলার ন্যায়বিচার করার মাধ্যমে, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের পথ সুগম করবে। যার মাধ্যমে ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়া কক্সবাজার জেলাবাসীও (হোস্ট কমিউনিটি) ফিরে পাবেন তাদের সেই পুরাতন উখিয়া-টেকনাফ।

জেলার সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, আদালতে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখে মিয়ানমারের ওপর আর্ন্তজাতিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে কক্সবাজার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।

কক্সবাজার শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূর্ণবাসন কেন্দ্রের উপ প্রকল্প পরিচালক (ডিপিডি) জেসমিন আক্তার জানান, হোস্ট কমিউনিটির অংশ হিসেবে তিনি আশা করেন, ন্যায়বিচারের মাধ্যমে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাবে।

এছাড়াও, আর্ন্তজাতিক আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন চার আদেশ রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও মর্যাদাসম্পন্ন প্রত্যাবাসনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর সহ-সভাপতি মাস্টার আব্দুর রহিম।

রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, এই অন্তর্বতীকালীন আদেশ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য আশার আলো। এই আইনি ধারা অব্যাহত থাকলে, রোহিঙ্গা সমস্যা একটি স্থায়ী সমাধানের দিকে যাবে। তা সম্ভব হলে, রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কক্সবাজারবাসীও রক্ষা পাবে।


   আরও সংবাদ