ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ঢাবির শামসুন্নাহার হলে 'অবৈধ দোকান' উচ্ছেদে ছাত্রলীগের বাধা


প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


ঢাবির শামসুন্নাহার হলে 'অবৈধ দোকান' উচ্ছেদে ছাত্রলীগের বাধা

   

ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শামসুন্নাহার হলের সীমানার বাহিরে মিশুক মনির চত্ত্বর সংলগ্ন আশেপাশের এলাকার দোকান অপসারণ ও ছিন্নমূল মানুষদের উচ্ছেদে ছাত্রলীগ নেত্রীদের বাধা দিয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হল সংসদের উদ্যোগে প্রশাসন ঘোষিত দোকানগুলো সরাতে গেলে ছাত্রলীগ নেত্রীরা দলবেধে মামনে দাঁড়িয়ে বাধা দেয়।

এসময় তাদের বলতে শোনা যায়, দোকান সরিয়ে ফেললে শিক্ষার্থীরা খাবে কী!কার অনুমতিতে এগুলো সরানো হচ্ছে? দেখা যায় উচ্ছেদে নেতৃত্ব দেওয়া হল সংসদের নির্বাচিত (জিএস) আফসানা  ছাফাকে তুই তুকার করে বলতে শোনা যায়। আফসানাও বলতে থাকে 'তোমাকে আমি চিনি না, তুমি বলে সম্বোধন করছ কেনো?'

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে শামসুন্নাহার হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে হল সংসদের জিএস আফসানা ছাফা  বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দোকানগুলো এখানে অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করেছে। স্টেট ম্যানেজার এবং হল প্রাধ্যক্ষ এসব অবৈধ বলে নোটিশ দিয়েছে। সেই নির্দেশনা পেয়ে আমরা এখানে এসেছি।

দোকান গুলো উচ্ছেদের কারণ কী এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এসব দোকানের কারণে এখানে বিকেল বেলায় বাজারে পরিণত হয়।এখানে বহিরাগত, মাদকসেবী, ভবঘুরে লোকজন আড্ডা দেয়। যার ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা হীনতায় ভোগে। তাই আমরা স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে এসেছি। এসময় তিনি এসব দোকান থেকে ছাত্রলীগ নেত্রীদের বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ করেন।

বাধার কারণ কী জানতে চাইলে প্রতিবেদকের সাথে নিজের নাম এবং বক্তব্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে ছাত্রলীগ নেত্রীরা। পরে জানা যায়, ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে নির্বাচিত পাঠকক্ষ বিষয়ক সম্পাদক বিশাখা দাস ইরা এতে নেতৃত্ব দেয়। তার সাথে রয়েছে আরেক ছাত্রলীগ নেত্রী সেহেরজান সহ প্রায় বিশ জন। 

বিশাখা বলেন, আমি জেনারেল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এখানে এসেছি। নাম বলার প্রয়োজন মনে করছিনা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এতে সম্মতি দিয়েছে আপনারা বাধা দিচ্ছেন কেন? এমন প্রশ্নে এ নেত্রী বলেন, দোকান ওঠে গেলে আমরা নাস্তা করবো কোথায়। হলের ভেতর বাড়তি দোকান দেওয়া ছাড়া এটা উচ্ছেদ হতে পারে না।একপর্যায়ে সাংবািদকদের সাথে অশোভন কথাবার্তা বলতে শুরু করেন।

ঘটনাস্থলে এক ছাত্রলীগ নেতা থেকে জানা যায়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।  

এদিকে উচ্ছেদে সম্মতি জানিয়েছে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয় সাহা বলেন, এ ব্যাপারে হল সংসদের আগ থেকেই দাবি ছিল। আমি দুবছর যাবৎ বিভিন্নভাবে এসব উচ্ছেদ করার জন্য চিঠি দিয়ে আসছি। দোকানগুলো থাকার কারণে এখানে বহিরাগত, গাড়ি পার্কিং শিক্ষার্থীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। তাই এগুলো উচ্ছেদে আমার সম্মতি রয়েছে। 

তিনি বলেন,এ জায়গা স্টেট ম্যানেজারের দায়িত্বে।আমার দায়িত্বে হলে আমি সরাতাম।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেট ম্যানেজার মিসেস সুপ্রিয়া দাস বলেন,এটা হল প্রশাসনের দায়িত্ব। আমরা চিঠি দিয়ে তাদের অবহিত করেছি।

স্টেট ম্যানেজারের পাঠানো চিঠিতে দেখা যায়,হল প্রাধ্যক্ষেরও অনুমতি রয়েছে দোকানগুলো উচ্ছেদে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একে এম গোলাম রব্বানী বলেন, গত কাল ওই দোকান গুলো বন্ধ করা হয়েছে। আমি সবাইকে বলে দিয়েছি। এট এস্টেট অফিস করবে। প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশ সাথে থাকবেন।

উল্লেখ্য, শামসুন্নাহার হলের পাশে মিশুক মনির চত্ত্বর সংলগ্ন আশেপাশের এলাকার দোকান থেকে হল ছাত্রলীগের নেতৃদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।


   আরও সংবাদ