ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়ানোর কারন বাদুড় !


প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়ানোর কারন বাদুড় !

   


নিউজ ডেস্কঃ চীনে ১৭০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া উহানের করোনাভাইরাসের জন্য এক ধরনের সাপই প্রধান উৎস হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসের জন্য চূড়ান্তভাবে বাঁদুড়ই দায়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

পরিবেশগত স্বাস্থ্যখাতের অলাভজনক সংস্থা ইকোহেলথ অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট ডা. পিটার ড্যাসজাক বলেছেন, ভাইরাসটির জেনেটিক ক্রমের দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রত্যেক করোনাভাইরাসের সঙ্গে এর মিল রয়েছে। আর এই ভাইরাসের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ভাইরাসটিও বাদুড় থেকে ছড়ায়।

বুধবার ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় চীনা রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের অধ্যাপক গুইঝেন উ বলেছেন, তারা এখন পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছেন, তাতে প্রাথমিকভাবে ভাইরাসটির সঙ্গে বাঁদুড়ের শরীরে পাওয়া ভাইরাসের সামঞ্জস্য পাওয়া যাচ্ছে। প্রাণী জগতে বাদুড়কে দীর্ঘ সময় ধরেই বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ছড়ানোর দায়ে ভিলেন হিসেবে দেখা হয়।

ডানাযুক্ত স্তন্যপায়ী এই প্রাণীটি মার্বার্গ, নিপাহ ও হেন্দ্রাহ-সহ আরও বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী ভাইরাসের আধার। যা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং উগান্ডায় ইতোমধ্যে মানুষের শরীরে রোগ এবং প্রাদুর্ভাব ঘটিয়েছে।

বাদুড়কে প্রাকৃতিকভাবেই ইবোলা, র‍্যাবিস, সার্স এবং মার্স ভাইরাসের বাহক বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে সার্স এবং মার্স করোনাভাইরাস দুটি বর্তমানে একই রুপে উহানে আবির্ভূত হয়েছে।

 ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের বিস্তারের সময় বেড়ালের মতো এক ধরনের প্রাণীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। আর এই প্রাণীর দেহে ভাইরাসটি বাদুড়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। এশিয়ার বেশ কিছু দেশে বেড়ালের মতো দেখতে ওই প্রাণীটির মাংস খাওয়া হয়। এছাড়া ২০০০ সালের দিকে মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়া মার্স ভাইরাসের উৎপত্তিও ছিল উট।

বিজ্ঞানীরা এই ধরনের ভাইরাসকে সংক্রামক হিসেবে বলে থাকেন; যা প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে স্থানান্তর হয়। নিপাহ ভাইরাসের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের মারাত্মক প্রদাহ-সহ (এনসেফালাইটিস) বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়; যা বাদুড়ের মূত্র অথবা লালার মাধ্যমে খেজুরের রসে সংক্রমিত হয়। সংক্রমিত এই খেজুরের রস পানে মানুষের শরীরে ভাইরাসটি ছড়িয়ে যায়।

লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের ভাইরাসবিদ ডা. স্ট্যাথিস জিওটিস বলেন, বাদুড়বাহিত ভাইরাস নিয়ে কর্মরত ভাইরাসবিদদের কাছে নতুন এই করোনাভাইরাসের সঙ্গে বাদুড়ের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আশ্বর্যজনক হিসেবে আসেনি। তিনি বলেন, সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে ভাইরাসের জন্ম এবং পুনর্জন্ম দেয়ার জন্য বাদুড়কে গুরুত্বপূর্ণ আধার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিজ্ঞানী জিওটিস বলেন, চীনের বিভিন্ন প্রজাতির বাদুড়ের মধ্যে হর্স সো প্রজাতির বাদুড় থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 


   আরও সংবাদ