ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণে ট্রাস্ট গঠনের ঘোষণা মোদির


প্রকাশ: ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণে ট্রাস্ট গঠনের ঘোষণা মোদির

   

নিউজ ডেস্কঃ পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী এবার অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্যে ট্রাস্ট গঠনের ঘোষণা দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রামমন্দির নির্মাণের জন্য ট্রাস্ট গঠন করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে তিন মাস সময় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ অনুযায়ী দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে ট্রাস্টের ঘোষণা আসলো মোদির মুখ থেকে।

ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী আজ বুধবার ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদি ঘোষণা দেন, ‘আমার সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ‘শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র’ নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করা হবে। ওই ট্রাস্ট রাম মন্দির নির্মাণ ও সেই সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় নিয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে।

বিজেপি দলীয় ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী সংসদের প্রতি আহ্বান জানান, ‘আসুন অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণকে সমর্থন জানাই।’ প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সরকারদলীয় আইনপ্রণেতারা সংসদে ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিতে শুরু করেন। মন্দির নির্মাণে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডে ১৫ জন সদস্য থাকবেন বলেও জানিয়েছেন মোদি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গত ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক আদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই আদেশে দেশের শীর্ষ আদালত জানায়, অযোধ্যায় বিতর্কিত জমিটি রাম লাল্লার (শিশু রাম) নামেই বরাদ্দ হবে এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে একটি মসজিদ তৈরির জন্য বিকল্প পাঁচ একর জমি দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ সরকার অযোধ্যাতে নতুন করে ৫ একর জমি ওয়াকফ বোর্ডের হাতে দেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে বলেও সংসদে জানান প্রধানমন্ত্রী। ট্রাস্ট গঠনের জন্য অনেকটা সময় ব্যয় করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ট্রাস্টে কারা থাকবেন সেই নাম বাছাই করতে নাকি কিছুটা কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রামমন্দির ইস্যুকে ফের সামনে আনার চেষ্টা করছে বিজেপি। মন্দির নির্মাণের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিলেও ইস্যুটি এখনই শেষ হতে দিচ্ছে না বিজেপি। তাই দিল্লি ভোটের আগে আগে ট্রাস্ট গঠনের ঘোষণা করে ফের হিন্দুত্ববাতী রাজনীতিকেই তুলে ধরেছে দলটি।

শাহীনবাগ ও জামিয়া মিলিয়ায় চলমান নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভকে দিল্লির ভোটে টার্গেট করেছে বিজেপি। এবার তাতে যুক্ত হলো রামমন্দির। আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের রাজনৈতিক মহলের অনেকে বলছেন, দিল্লির নির্বাচনের আগে ভেবেচিন্তেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করলো বিজেপি।

১৯৯২ সালে কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল উত্তরপ্রদেশের অনেযাধ্যায় ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে। দীর্ঘদিন চলে রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ সংকট। গত বছরের শেষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেন।

রায়ে বলা হয়, বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমি মন্দির নির্মাণের জন্য সরকার পরিচালিত ট্রাস্টকে দেয়া হবে এবং ওই শহরেই একটি ‘উপযুক্ত’ স্থানে পাঁচ একর জমি মসজিদ তৈরির জন্যে দেয়া হবে মুসলিমদের। রাম মন্দির নির্মাণ সংক্রান্ত ট্রাস্ট গঠনের জন্যে সেই সময় সরকারকে তিন মাসের সময়সীমা বেধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

দিল্লি নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন বিজেপির রাম মন্দির সংক্রান্ত এই ঘোষণা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে কিনা তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। কিন্তু সেই অভিযোগ বাতিল করে দেশটির নির্বাচন কমিশন জানায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সরকার এমন পদক্ষেপ নেয়ায় এটি কোনোভাবেই নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেনি।


   আরও সংবাদ