ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মুখরিত বইমেলা


প্রকাশ: ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মুখরিত বইমেলা

   

স্টাফ রিপোর্টার : দিনে দিনে জমতে শুরু করেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২০। প্রিয় লেখকের নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতেই মেলায় বাড়ছে পাঠক এবং ক্রেতার সংখ্যা। অমর একুশে গ্রন্থমেলার চতুর্থ দিনে মেলায় প্রকাশিত হয়েছে নতুন ৯৫টি বই। অন্যান্য দিনের মতই মেলা চলে বেলা ৩ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত।

এর আগে বিকেল ৪ টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অজয় দাশগুপ্ত রচিত 'বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন কৌশল ও হরতাল' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

এসময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুভাষ সিংহ রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নূহ-উল-আলম লেনিন এবং আবু সাঈদ খান। লেখকের বক্তব্য প্রদান করেন অজয় দাশগুপ্ত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রামেন্দু মজুমদার।

এসময় প্রাবন্ধিক বলেন, তরুণ বয়সেই শেখ মুজিবুর রহমান লক্ষ্য স্থির করেছিলেন স্বাধীনতা। পূর্ববঙ্গের বাঙালির নিজস্ব রাষ্ট্র চাই। এ জন্য সময়োচিত রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন করায় তিনি ছিলেন কুশলী, বিচক্ষণ। লক্ষ্যে পৌঁছাতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়ন করতে গিয়ে সর্বদা নজর ছিল জনগণকে যত বেশি সম্ভব সম্পৃক্ত করা।

তিনি আরোও বলেন, ভাষা আন্দোলন, পঞ্চাশের দশকে আওয়ামী লীগকে পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষমতায় নিয়ে আসা, ষাটের দশকে সামরিক শাসনকে চ্যালেঞ্জ প্রদান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির রূপরেখা তুলে ধরা এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সবকিছুতেই তিনি সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে চলতে চেয়েছেন।

অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দ বলেন, বাঙালির ইতিহাসে সবচেয়ে দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর কাছে স্বাধীনতা মানে ছিল গণমানুষের মুক্তি এবং নিপীড়িত, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন। আর এ স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলার জন্যই তিনি নিবিষ্ট থেকেছেন। অদম্য সাহস, সময়োচিত সিদ্ধান্ত ও ফলপ্রসূ রাজনৈতিক কর্মসূচিই ছিল বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনের কৌশল। বাঙালির জন্য স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র গঠনের পরম লক্ষ্য সামনে রেখেই বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়েছেন এবং আন্দোলন সংগ্রামের জন্য বাঙালির চেতনাকে প্রস্তুত করে তুলেছেন। 

গ্রন্থের লেখক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুকে নানামুখী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হয়েছে। দিনের পর দিন রাজপথে সংগ্রাম করে তিনি গণমানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন। তাঁর আন্দোলন কৌশলের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল মানুষকে সম্পৃক্ত করা।

সভাপতির বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সাফল্যকে বুঝতে হলে তাঁর আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাসকে গভীরভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। আজীবন অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালনকারী বঙ্গবন্ধু ধর্ম, বর্ণ, পেশা নির্বিশেষে সকল মানুষকে নিয়েই আন্দোলনের পথে অগ্রসর হয়েছেন। তাঁর আন্দোলনে গণসম্পৃক্ততা ছিল বলেই চ‚ড়ান্ত সাফল্য হিসেবে আমরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি পেয়েছি। 

অনুষ্ঠানের শেষে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি আলতাফ হোসেন, কবি জাহিদ হায়দার, কবি ফারহান ইশরাক ও কবি রনজু রাইম। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী এনামুল হক বাবু, ফয়জুল আলম পাপ্পু, ও নায়লা 
তারান্নুম চৌধুরী। সংগীত পরিবেশন করেন ফাতেমা-তুজ-জোহরা, সুজিত মোস্তফা, এ কে এম শহীদ কবীর পলাশ, সম্পা দাস ও মো. মেজবাহ রানা। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন কাজী ইমতিয়াজ সুলতান (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), ফিরোজ খান (সেতার) এবং ডালিম কুমার বড়–য়া (কী-বোর্ড)। 

অন্যদিকে, 'আজ লেখক বলছি' অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন মোহিত কামাল, স. ম. শামসুল আলম, সাকিরা পারভিন সোমা, রাহেল রাজিব। 

উল্লেখ্য, আগামীকাল অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৫ম দিনে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে সৈয়দ হাসান ইমাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হবে নূহ-উল-আলম লেনিন রচিত 'রাজনীতিতে হাতেখড়ি ও কলকাতায় শেখ মুজিব'শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।


   আরও সংবাদ