ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

সাংবাদিক নির্যাতনে, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের দাবি নেতাদের


প্রকাশ: ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


সাংবাদিক নির্যাতনে, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের দাবি নেতাদের

   

স্টাফ রিপোর্টার : সময় এসেছে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্যাতন বন্ধের আন্দোলনের। দিনদিন সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন বেড়েই চলেছে। নির্যাতনকারীদের বিচারের আওতায় না এনে বাড়ি ফিরে যাব না।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে ' ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বেশ কয়েকজন সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে' শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এ দাবি জানায়।

এসময় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকদের সংকটকালীন সময় পাশে দাঁড়িয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি। যেমন দাঁড়িয়েছিল সাগর-রুনি হত্যা কান্ডের বিচার চেয়ে। আমরা যারা সাংবাদিকতা করি, সবাই জানি আমাদের পেষাটি ঝুঁকিপূর্ণ। দেশে যখন কোন তালমাটাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সবচেয়ে বেশি আমরা নিগৃহীত হই। সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হই ও সংকটের পড়ি আমরা। যে সরকার ক্ষমতায় থাকছে, সে সময়ই আমরা নিগৃহীত হচ্ছি।  সময় এসেছে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, আমরা যদি একসাথে থাকতে পারি তাহলে রাষ্ট্র অবশ্যই আমাদের বিষয় ভাবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন, সিটি নির্বাচনের দিন পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ১০ থেকে ১১ জন সাংবাদিককে হামলা করে আহত করা হয়েছে। এখন ফেব্রুয়ারি মাস চলছে ঠিকা আট বছর আগে এই মাসেই সাগর-রুনিকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিলো। সেই ফেব্রুয়ারি মাসে আবার সাংবাদিকদের ওপর হায়নারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সাংবাদিক সুমন এর উপর হামলার পরে র‍্যাবের ডিজি দেখতে গিয়েছিলেন। মনে করেছিলাম হাসপাতালে নবনির্বাচিত দুই মেয়র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যাবেন, খোঁজখবর নিয়ে হামলাকারীদের উপর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আমরা সে জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু তারা সুমনকে হাসপাতালে দেখতে যায়নি কোনো খোঁজখবর নাই। আমরা সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে গিয়ে তাকে দেখতে গিয়েছি তার খোঁজ খবর নিয়েছি। 

তিনি বলেন, ক্রাইম রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ডিইউজে ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সকল সাংবাদিকরা একই কাতারে দাঁড়িয়ে একই বক্তব্য দিচ্ছি আমরা। সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলবো সাংবাদিকদেরকে রাস্তায় আপনারা ঠেলে দিবেন না। আমরা রাস্তায় নামতে চাইনা। সাগর-রুনিকে হারিয়ে আমরা বেদনা ভারাক্রান্ত। সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনা হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আমাদেরকে এই পথে যেতে বাধ্য করবেন না। আগামী শনিবারের মধ্যে যদি সুমনসহ ডিআরইউ সদস্যদের ওপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় না আনা হলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। একই সাথে আমাদেরই এক সদস্য ( মুন্নি সাহা) সুমনের বিরুদ্ধে অবান্তর নিউজ পরিবেশন করেছেন। এজন্য তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলব। যদি সে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশের) মহাসচিব শাবান মাহমুদ বলেন, সিটি নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের উপর হামলা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা পাইনি আমরা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ৩০ জন সাংবাদিক এ পর্যন্ত হত্যা হয়েছে। শুধুমাত্র একজন সাংবাদিকের হত্যার বিচার হয়েছে। পহেলা ফেব্রুয়ারির ঘটনা প্রমাণ করে না যে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে। প্রিয় সহকর্মী দের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা বাড়ি ফিরে যাব না। ‌

প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নারী বিষয়ক সম্পাদক রিতা নাহার, ডিইউজের কল্যাণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, প্রমুখ।


   আরও সংবাদ