প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন
ঢাবি প্রতিনিধি : বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নিন্মমানের খাবার ও টি-শার্ট দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রদ্ধক্ষ্য অধ্যাপক ড.জিয়া রহমানের পদত্যাগের দাবিতে সকাল থেকে আন্দোলন করছে হলের কয়েকশত আবাসিক শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুযারি) সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে হল কার্যালয়ের সামনে এই পদত্যাগের আন্দোলন করছে তারা।
জানা যায়, আজ সকাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্ধধনি অনুষ্টান অনিষ্ঠত হয়। এসময়ে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের টি-শার্ট এবং খাবার বিতরণ করা হয়। এসময় হলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন তাদেরকে খুব নিন্মমানের টি-শার্ট দেয়া হয়েছে। তারা আরোও বলেন, সকালে তাদের খাবার দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দেওয়া হয়নি।
এরই জের ধরে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে হলের সামনে বিতরণ করা টিশার্ট জড়ো করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্টের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেন। এসময় তারা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বর্জনের ঘোষণা দেন।
এসময়, 'চোর জিয়া গদি ছাড়', 'বাটপার জিয়া হল ছাড়' এই ধরণের স্লোগান দেয়।
এ সময় জিয়া হল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হাসিবুল হাসান শান্ত বলেন, পদত্যাগের এ আন্দোলন একদিনেই হয়নি, দীর্ঘদিনের জমানো ক্ষোভ থেকে হয়েছে। আমাদের আজকে যে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল সেখানে প্রথমে যে টি-শার্টটি দেখানো হয়েছিল সেটি দেয়া হয়নি। যে খাবার দেয়া হয়েছে তা খুব নিম্নমানের।
তিনি আরোও বলেন, আমাদের হলের শিক্ষার্থীরা যেখানে থাকার জায়গা না পেয়ে গণরুমে মানবেতর জীবনযাপন করছে সেখানে হলের স্টাফরা প্রায় দশটি রুম দখল করে আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের রিডিং রুমের সমস্যা দীর্ঘদিনের। বারবার প্রভোস্টকে এসব বিষয়ে অবহিত করার পরও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি।
জিয়া হল ছাত্র সংসদের সদস্য মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। গতবছর রমজানেও এরকম নিন্মমানের খাবার দেয়া হয়েছিল এবং শিক্ষার্থীরা তখন আন্দোলন করেছিল। আমরা হল সংসদ থেকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তার কাছে তুলে ধরলে তিনি সেসবের কোনো তোয়াক্কা না করে উল্টো আমাদের সাথে ধমকের সুরে কথা বলেন।’
তিনি আরোও বলেন, ‘শিক্ষক হিসেবে তাকে সম্মান দিতে গিয়ে আজ আমরা এতটাই বঞ্চিত হচ্ছি যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো কাজই করতে পারছি না। তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন ফি’র নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেন। এমনকি তার ব্যক্তিগত খরচের টাকা নেন হল সংসদের ফান্ড থেকে।’
হলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাফওয়ান চৌধুরী বলেন, তারা বিগত কয়েকবছর আমাদেরকে এমন খাবার দিয়ে আসছে। এবার বলেছিলো উন্নত মানের খাবার এবং টি-শার্ট দিবে। মাঠে গিয়ে দেখি ফলাফল উল্টো।
তিনি আরোও বলেন, হলের প্রাধ্যক্ষই ক্যাম্পাসে আমাদের অবিভাবক। অবিভাবক মানেই হল বাবা -মা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজ আমাদের বাবা-মাকেই চোর বলতে হচ্ছে।
এবিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও তো কিছু করার নেই।অন্যান্য হলের টি-শার্টের সাথে তুলনা করে দেখুন নিম্নমানের কিনা? আমাদের হলের আবাসিক শিক্ষকদের নিয়ে সাব কমিটি করে আমরা সমস্ত আয়োজন করেছি।আমি সব সময়ই উদার। যদি খাবর বা টি-শার্ট নিম্নমানের হয়, তারা আমাকে বিষয়টি জানাতে পারতো।’’
খেলা বর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন,‘‘ আমাদের খেলার প্রায় পাঁচটি আইটেম শেয় হয়ে গিয়েছিল।এখন ৫-৬ জন শিক্ষার্থী বাদে সবাই চলে গেছে।খাবার তো এখনো আসেনি।তারপরও তারা চলে গেছে। এই কালচারটা তো ভালো না।’’