ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষিঋণের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক


প্রকাশ: ২২ জুলাই, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


কৃষিঋণের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

   

স্টাফ রিপোর্টার : টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে আবারও কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন (২০১৯-২০) অর্থবছরে ২৪ হাজার ১২৪ কোটা টাকা বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা  দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিঋণ বিতরণ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের বিষয়ে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য ১০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ১৩ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভণর এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, কিছু দুর্বল ব্যাংক ছাড়া সবাই কৃষিঋণে অংশগ্রহণ করছে। তবে মধুমতি ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। তাদের বিষয়টা আমাদের বিবেচনায় আছে।

তিনি জানান, গত অর্থবছরে মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন (আইএমএফ) এর মাধ্যমে ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যার পরিমাণ ৮ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। তবে আইএমএফ থেকে নিরুৎসাহিত করতে ব্যাংকগুলোকে কৃষিঋণ সহজীকরণে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে ব্যাংক বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরতা আরও কমে আসবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো মোট ২৩ হাজার ৬১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বিগত অর্থবছরে মোট ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪২৪ জন কৃষক কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। যার মধ্যে নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন (এমএফআই) এর মাধ্যমে ১৬ লাখ ১ হাজার ৮৫৬ জন নারী প্রায় ৭ হাজার ১৯০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন। ওই অর্থবছরে ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ২৩৭ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৬ হাজার ৩২২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন। চর ও হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৯ হাজার ৯৫০ জন কৃষক প্রায় ৩১ কোটি ৬১ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন।

নতুন কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। এমএফআই লিংকেজের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে হ্রাস করে ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব শাখা এবং এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া। কাজু বাদাম ও রাম্বুটান চাষে ঋণ প্রদান। কচুরিপানার ডাবল বেড পদ্ধতিতে আলু চাষে ঋণ প্রদান। ১ টাকা হতে যে কোন ব্যাংকে যে কোন অংকের সব বকেয়া ও ফসল ঋণের ক্ষেত্রে সিআইবি রিপোর্ট করতে হবে। তবে নতুন মঞ্জুরী নবায়নের জন্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ও ঋণের ক্ষেত্রে সিআইবি রিপোর্ট সংগ্রহের দরকার হবে না। ঋণ পরিশোধের স্বাভাবিক সময়সীমা (বীজ উৎপাদন ও বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের জন্য) সংযোজন। শষ্য খাতে ঋণ বিতরণের জন্য একর প্রতি ঋণ সীমা যৌক্তিক পরিমাণ বাড়ানো। গাভী পালন, গরু মোটাতাজাকরণ, ছাগল, ভেড়া পালনের জন্য ঋণ নিয়মাচার সংযোজন।

বাণিজ্যিকভাবে রেশম উৎপন্ন ঋণ নিয়মাচার সংযোজন। এটুআই কর্তৃক গৃহীত কৃষি ও পল্লী ঋণ কমিটির কার্যক্রম বাস্তবায়ন।
কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রার সাথে সাথে অর্জনও বাড়ছে প্রতি বছর। সদ্য সমাপ্ত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। তবে বিতরণ হয়েছে ২৩ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ১০৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এর আগের বছরেও এই অর্জন ছিলো ১০৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ।


   আরও সংবাদ