ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

নরসিংদীর মাধবদীতে হানিফ মিয়ার স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাঁই


প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন


নরসিংদীর মাধবদীতে হানিফ মিয়ার স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাঁই

   

নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীতে প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে ছাঁই হলো সত্তোরোর্ধ বৃদ্ধের স্বপ্ন। বাছুরসহ একটি দুধের গাভী ও আটমাসের গর্ভবতী আরেকটি গাভীসহ সদ্য ঘরে তোলা ১০মন সরিষা ও বসত ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার রাতে সদর উপজেলার মাধবদীর দরগাবাড়ি মাদরাসার পশ্চিম পাশে আবু হানিফ মিয়ার বসতঘরে এ বর্বরতার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। আবু হানিফ বি-বাড়িয়া জেলার আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে। তিনি মাধবদীতে সাবেক রেললাইন সংলগ্ন দরগাবাড়ি ছোটমাধবদী এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমানের বাড়ির পাশে একটি ছোট টিনের ঘরের অর্ধেকে স্ত্রী ও এক নাতিকে নিয়ে বাস করতো বৃদ্ধ হানিফ মিয়া ও বাকি অর্ধেকে ৩টি গরু পালন করতো।

বুধবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে হঠাৎ হানিফ মিয়ার বসতঘর থেকে আগুনের শিখা উঠতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। এসময় ফায়ার সার্ভিসের একটি উইনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে পুড়ে মারা যায় গৃহপালিত ৩টি পশু, ১০মন সরিষা, নগদ ৫ হাজার টাকাসহ প্রয়োজনীয় জরুরী কাগজপত্র। এ অগ্নিকান্ডে জীবনের অর্জিত সম্পদ সব হারিয়েছেন ভুক্তভোগি বৃদ্ধ হানিফ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পোড়া ধ্বংসস্তুপে বসে হাউমাউ করে কাঁদছে সত্তোরোর্ধ বৃদ্ধ আবু হানিফ মিয়া। এসময় কান্নাজড়িতকণ্ঠে তিনি জানান, নিজের কোন সহায় সম্বল না থাকায় মাধবদীর পল্লী চিকিৎসক হাজী শফি উদ্দিনের রেল লাইন সংলগ্ন জমিতে একটি টিনের ঘর তুলে গত ১০ বছর যাবৎ বৃদ্ধ দম্পতি বসবাস করে আসছিলেন। 

গত কয়েকবছর আগে তার চার মেয়ে মিলে তাকে একটি গরু কিনে দেয়। সেটা লালন পালন ও বর্গাচাষের জমি থেকে আয়ের টাকায় একমাত্র ছেলের ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখেন বৃদ্ধ হানিফ মিয়া। চলছিলেনও ভালোই। একটি গরু থেকে তার তিনটি গরু হয়। এর মধ্যে একটি থেতে প্রতিদিন ৮ লিটার দুধ পাওয়া যেতো, অন্যটিও ছিলো ৮মাসের গর্ভবতী। এরই মাঝে দুর্বত্তদের দেয়া আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেলো।

তিনি অভিযোগ করে বলেন তার পালিত গরুর মলমূত্রের গন্ধ যাওয়ার অজুহাতে পাশের বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান ও তার ছেলে মাসুদ প্রায়ই তাকে বকাঝকা করতো। এমনকি বিভিন্ন সময় বৃদ্ধ হানিফকে মারধরসহ এখান থেকে উচ্ছেদের জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাতো। 

গত মাসদেড়েক আগেও তার একটি খড়েরগাদা পুড়িয়ে দেয়াসহ একাধিকবার তার ফসল পুড়িয়ে দেয়া হয়। এঘটনাটিকেও তিনি পরিকল্পিত অগ্নিকান্ডের ঘটনা বলে দাবী করেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মুক্তিযোদ্ধা আতাউর বলেন বৃদ্ধের সাথে তাদের কোন বিরোধ ছিলোনা, বরং এ অগ্নিকান্ডে তাদের ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।

এ ঘটনায় মাধবদী থানায় একটি অভিযোগ করা হলে থানার উপ-পরিদর্শক মীর শিবলী কায়েস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজিনয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

স্টাফ রিপোর্টার : আগামী পহেলা মার্চ থেকে সরকারি এবং ২ মার্চ থেকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের নিবন্ধন শুরু হবে। উভয় ক্ষেত্রেই ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন প্রাক-নিবন্ধনকারীরা।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।

এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় সব প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তি এবং ৬ লাখ ১৮ হাজার ২৫৯ ক্রমিক পর্যন্ত বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের নিবন্ধন করতে পারবেন। উভয় ক্ষেত্রেই পাসপোর্টর মেয়াদ ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাসপোর্টর মেয়াদ থাকতে হবে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি বাড়িয়ে তিনটি হজ প্যাকেজ অনুমোদন করেছে সরকার। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজ অনুমোদন করা হয়েছে।

সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এর মোট ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা বেশি। প্যাকেজ-২ এর মোট ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৬ হাজার টাকা বেশি। সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো ৩ লাখ ১৫ হাজার নতুন প্যাকেজ-৩ এর প্রস্তাব করা হয়েছে।

সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এর হজযাত্রীরা পবিত্র মসজিদুল হারাম চত্বরের সীমানা থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ মিটারের মধ্যে, প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীরা সর্বোচ্চ ১৫০০ মিটারের মধ্যে এবং প্যাকেজ-৩ এর হজযাত্রীরা ১৫০০ মিটারের অধিক দূরত্বে অবস্থান করবেন।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীর জন্য ৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকার প্যাকেজ প্রস্তাব করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ এজেন্সি সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১, প্যাকেজ-২ ও প্যাকেজ-৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।

তিনি জানান, হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বিমান ভাড়া বাবদ এক লাখ ৩৮ হাজার টাকাসহ সর্বনিম্ন এক লাখ ৫২ হাজার ১৯০ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। তবে হজযাত্রীদের আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে প্যাকেজ মূল্যের পুরো টাকা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিকে পরিশোধ করতে হবে।

বেসরকারিভাবে 'সাধারণ' প্যাকেজের মাধ্যমে এবার হজ পালনে ব্যয় হবে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকা ও 'ইকোনোমি' প্যাকেজের মাধ্যমে ব্যয় হবে ৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা। দামি প্যাকেজটি সুযোগ-সুবিধার উপর ভিত্তি করে হজ এজেন্সিগুলো ঘোষণা করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জিলহজ বা ৩০ জুলাই পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

হজযাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, মুয়াল্লিম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসাব করে ২০২০ সালের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য তিনটি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এজেন্সিসমূহের জন্য একটি প্যাকেজের প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লক্ষ ২০ হাজার জনসহ মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গমনের সুযোগ পাবেন।


   আরও সংবাদ