ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্রাজিলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন, বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা


প্রকাশ: ১৮ মার্চ, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


ব্রাজিলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন, বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা

   

কূটনৈতিক প্রতিবেদক : ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে উৎসাহ ও প্রাণবন্ত পরিবেশে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করে। দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসাবে পালনের ফলে আগের বছরগুলোর মত এবারেও দূতাবাসের অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী বিশাল পরিসরে উদযাপনের সকল প্রস্তুতি দূতাবাস সম্পন্ন করলেও ব্রাজিলের বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় সেগুলো স্থগিত করা হয়। 

১৭ই মার্চ বিকেলে বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীদের পরিবেশনায় ব্রাজিলের একটি খ্যাতনামা মিলনায়তনে বাংলাদেশী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং সেদিন সকালেই ব্রাজিলের একটি স্থানীয় স্কুলে জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। 

এছাড়া বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি আন্তর্জাতিক স্কুলেও ১৯শে মার্চ সন্ধ্যায় আরেকটি অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্রাসিলিয়ার গভর্নর সকল স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছেন ।

একই সাথে ১০০ জনের বেশী মানুষের উপস্থিতিতে কোন অনূষ্ঠান না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে কিন্তু আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উৎসব উদযাপন করা হলো।

১৬ই মার্চ বিকেল পাঁচটায় দূতাবাস প্রাঙ্গনে শুরু হওয়া মূল অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ব্রাসিলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী শিশুরা বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধুর উপর চিত্রাংকন করে। ব্রাসিলিয়া প্রবাসী প্রায় সকল অভিবাসী বাংলাদেশী শিশু চিত্রাংকন পর্বে অংশগ্রহণ করে। 

বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সূচিত অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। 

পবিত্র কুরআন থেকে তেলওয়াতের পর বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, ১৫ আগষ্টে নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদ, মহান ভাষা আন্দোলন সহ গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী সকলের আত্মার মাগফেরাত এবং বাংলাদেশের ক্রমঅগ্রসরমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অব্যাহত অগ্রযাত্রা কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। 

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত অনেকগুলো আলেখ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। উপস্থিত সুধীবৃন্দ প্রদর্শিত ভিডিও চিত্রগূলো মুগ্ধতার সাথে উপভোগ করেন।  

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে অনুষ্ঠিত আলোচনাপর্বে ব্রাজিল-প্রবাসী বাংলাদেশের অভিবাসীরা এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। 

বক্তারা বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করে স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অবিস্মরনীয় অবদানের উপর আলোকপাত করেন। বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে আজকের প্রজন্মের প্রতিনিধি যুবক সবাই এ প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশ নেন।  বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিতে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা সম্ভব  বলে তাঁরা মত প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান তাঁর সমাপনী বক্তব্যে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় জীবন এবং আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনে তাঁর ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং অপরিমেয় অবদান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বলেন।


   আরও সংবাদ