প্রকাশ: ১৮ মার্চ, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন
কূটনৈতিক প্রতিবেদক : উৎসবের আমেজ ও গভীর ভালোবাসায় নাইজেরিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম শতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয় নানা আয়োজন ও আনুষ্ঠানিকতায়।
১৭ মার্চ সকাল ১০ টায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে চ্যান্সারীতে হাইকমিশনার জনাব শামীম আহসান কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উদযাপনের কর্মসূচী শুরু হয়।
পরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী-র বাণী পাঠ শেষে বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যবৃন্দ এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে মিশন এর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ আবুজায় অবস্থিত সিটি অব রিফিউজ অরফ্যানেজ বিকেলে পরিদর্শন করেন এবং এতিম শিশুদের সাথে কিছু সময় অতিবাহিত করেন। অতপর তারা কেন্দ্রের প্রশাসক এর কাছে এতিম শিশুদের জন্য খাদ্যদ্রব্য ও উপহার সামগ্রী হস্তান্তর করেন যা একটি আবেগঘন পরিবেশ এর সৃষ্টি করে।
এ সময় তারা উপস্থিত সকলের সামনে শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন।
সন্ধ্যায় ৭টায় হাইকমিশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য কর্মকান্ডের মধ্যে ছিল হাইকমিশনার ও তার সহধর্মিনী মিজ্ধসঢ়; পেন্ডোরা চৌধুরী, মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং প্রবাসী বাংলাদেশী কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, জন্মদিনের কেক-কাটা, বেলুন ওড়ানো, শিশুদের মাঝে ‘মুজিব গ্রাফিক্স নভেল’ বই বিতরণ এবং বঙ্গবন্ধু কর্নার পরিদর্শন।
আলোচনা পর্বে হাইকমিশনার শামীম আহসান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, “বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন”।
তিনি আরও বলেন যে, জাতির পিতার আদর্শ বাঙ্গালিদের নিরন্তর অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে সবসময় কাজ করবে। শৈশব থেকেই শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দৃশ্যমান অকৃত্রিম ভালোবাসা পরিণত বয়সে তা মহান নেতার রাজনৈতিক দর্শন “মানুষের প্রতি ভালোবাসা” এর মধ্য দিয়ে কিভাবে প্রতিফলিত হয় তার উপর হাইকমিশনার আলোকপাত করেন। জনাব আহসান এ প্রসংগে শিশুদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধু এবং তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে শিশুদের শিক্ষাদানের প্রয়োজনীয়তার উপরও আলোকপাত করেন। হাইকমিশনার বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে মিশন কর্তৃক গৃহীত বছরব্যাপী কর্মসূচী তুলে ধরার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাবঙ্গবন্ধুর ’ গঠনে উপস্থিত প্রবাসীদেরকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ শাহ ইকরামুল হক এর সঞ্চালনায় আলোচনা পর্বে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জনাব নুরুল আনোয়ার এবং মিশনের প্রথম সচিব জনাব বিদোষ চন্দ্র বর্মনও বক্তব্য রাখেন। প্রবাসী বাংলাদেশীরাও বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ ভূমিকার ওপর তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
জন্মদিন উপলক্ষ্যে অডিটরিয়ামটি উৎসবের সাজে সাজানো হয়। ব্যানার, বেলুন, রকমারী রঙ্গীন পোস্টার, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রভৃতি দিয়ে আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো হলটি প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনের একটি আনন্দঘন আবহ তৈরী করে।
অতিথিরা সম্প্রতি চালু করা মিশনের “বঙ্গবন্ধু কর্নার”-এর প্রশংসা করেন। কর্নারটি ঐতিহাসিক অনেক দুর্লভ ছবি ও মূল্যবান প্রকাশনা দিয়ে সাজানো হয়েছে যা জাতির পিতার দর্শন, আদর্শ, আত্মদান এবং সংগ্রাম সম্পর্কে জানতে দর্শনার্থী ও আগ্রহী পাঠকদেরকে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী খাবার পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের পরিবারসহ উপস্থিত ছিলেন।