ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ ভাদ্র ১৪৩১, ৭ শাওয়াল ১৪৪৫

২৫ শে মার্চ একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের দিন


প্রকাশ: ২৪ মার্চ, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


২৫ শে মার্চ একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের দিন

   

স্টাফ রিপোর্টার : ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস। বিশ্বের মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের দিন। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ দিনগত রাতে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) মানুষের ওপর নেমে আসে অতর্কিত আঘাত। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’-এর নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে বিশ্বের ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ চালায়।

‘অপারেশন সার্চ লাইট’ ছিল বাঙালির একটি প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার এক নারকীয় পরিকল্পনা। এদিন পোড়া মাটি নীতি নিয়ে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তানি ঘাতকরা।

সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যকে সামনে রেখে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পাকিস্তানি নরঘাতক জেনারেল টিক্কা খান বলেছিলেন, ‘আমি পূর্ব পাকিস্তানের মাটি চাই, মানুষ চাই না’। ফলশ্রুতিতে বাঙালি জাতির জীবনে নেমে আসে বিভীষিকাময় ভয়াল কালোরাত।

২৫ শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর হিংস্র দানবের মতো ঝাঁপিয়ে পড়লে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। 

বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলার সর্বস্তরের জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। ওইদিন রাত থেকেই আধুনিক অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে বাঙালিরা রাস্তায় নামেন। রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে নানাভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা থেকে পুলিশ ও ইপিআর-এর বাঙালি সদস্যরা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নামেন।

২৫ শে মার্চ কালোরাত শুরু হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। গ্রেফতার হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু ধানমন্ডির বাসভবন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এদিন রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর শুরু হওয়া গণহত্যা চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় ধরে। ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় বহুল প্রতীক্ষিত মহান স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

২৫ শে মার্চের কালোরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা ও সেই নৃশংস ঘটনার স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ মহান জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে ২৫শে মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। এরপর এই দিনটিকে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বাঙালি জাতি স্মরণ করে আসছে।

কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সারাবিশ্ব এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এর আঘাত এসেছে। সে কারণে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। জনসমাগম বা জমায়েত এড়াতে সবধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। সেইসঙ্গে স্বাধীনতা দিবসসহ সব রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে এবারের গণহত্যা দিবসে কোনো ধরনের কর্মসূচি থাকছে না।


   আরও সংবাদ