ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ভ্যানচালক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের খুঁজে খুঁজে খাদ্য দিলেন ইউএনও 


প্রকাশ: ৩০ মার্চ, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


ভ্যানচালক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের খুঁজে খুঁজে খাদ্য দিলেন ইউএনও 

   

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছা শহরে ঘুরে খুঁজে খুঁজে ভ্যান-রিক্সা চালক ও নিম্ন আয়ের ব্যবসায়ীদের চাল-ডাল-আলু ও সাবান বিতরণ করেছেন চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম। 

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে এসিল্যান্ডের সরকারি পিকআপে করে খুঁজে খুঁজে প্রত্যেককে ১০ কেজি চাল, ২ কেজি গোলআলু, হাফ কেজি মসুর ডাল ও একটি করে লাইফবয় সাবান প্রদান করেন। 

একইসাথে তাদেরকে বুঝিয়ে বলেন আগামী কয়টা দিন শহরে না বেরিয়ে বাড়িতে থাকার জন্য। দিনআনা দিনখাওয়া এসব ব্যক্তিরা রোজগারের আশায় শহরে এলেও তেমন কোন উপার্জন হচ্ছিল না। হঠাৎ করেই ইউএনওর কাছ থেকে এভাবে চাল ডাল পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন তারা। তারাও কথা দেন আগামী কয়েকদিন সরকারি নির্দেশনা মেনে বাড়িতে থাকবেন।

খাদ্য দ্রব্য পাওয়া ভ্যান চালক মিন্টু বলেন ভাই ইউএনও সাহেব ডেকে এই খাবার গুলো দিলেন আর বললেন এগুলো নিন। আর কয়েকটা দিন বাজারে বেরিয়েন না। মিন্টু বলেন ভাই এগুলো পেয়ে ভালো উপকার হলো। বাজারে তো ভাড়াই হচ্ছে না। এমনকি ইঞ্জিন ভ্যানে চার্জ দিতে যে খরচ তাও ওঠছে না। কদিন খেয়ে বাচতে পারবো। খুশি যে হয়েছেন তা মিন্টুর অভিব্যক্তিই বলে দিল। 

শহরের কামিল মাদরাসা মোড়ে (স্বর্ণপট্টি মোড়) ভ্রাম্যমান ভ্যানে শসা বিক্রি করেন পৌরসভার বিশ্বাস পাড়ার আব্দুল আলীম। তাকেও ইউএনও এমনই একটা প্যাকেট দিয়েছেন। আলীমের কাছে জানতে চাইলে বলেন ইউএনও সাহেব গাড়িতে করে এসে এটা আমাকে দিয়েছেন। আর বলেছেন যে শসাগুলো আছে ওগুলো বেচে বাড়িতে চলে যাবেন। আর এই ব্যাগটাতে খাবার আছে। এগুলো বাড়ি নিয়ে যাবেন। 

আগামী সাতটা দিন আর বাজারে না এসে বাড়িতে থাকবেন। এগুলো দিয়ে একয়দিন একটু কষ্ট করে চলবেন। আলীম আরো বলেন আমরা দিনআনা দিন খাওয়া মানুষ পেটের দায়েই বাজারে আসি। আগামী কটা দিনের তো ব্যবস্থা হয়েছে। এ কদিন বাড়িতেই থাকবো। আলীমের সামনেই রাস্তার অপর পাশে ফুটপথে ফল বিক্রি করেন তার পিতা আব্দুল আজিজ। তাকেও ইউএনও একটি খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেট দিয়েছেন। তিনি প্যাকেট পেয়েই দোকান গুছিয়ে একটি ভ্যানে চড়ে বাড়ির পথে চলে গেলেন। 

একইভাবে খাদ্য দ্রব্য পেয়েছেন শহরের পোষ্টঅফিস মোড়ে কাঠালপাতা বিক্রি করা এক বৃদ্ধ। তিনি বলেন বাবা পেটের দায়েই তো এই বিপদের মধ্যেও বাজারে এসেছি। কটা দিন বাড়িতেই থাকবো। 

এভাবে খুঁজে খুঁজে শহরের ৪০/৫০ ব্যক্তিকে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ শেষে দুপুরের খাবার খেতে যান ইউএনও জাহিদুল ইসলাম। এসব খাদ্যদ্রব্য বিতরণকালে তার সাথে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ণ চন্দ্র পাল ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ।

ইউএনও জাহিদুল ইসলাম বলেন আজ কিছু ভ্যান চালক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের খাবার দেয়া হয়েছে। অন্যদেরও তালিকা করা হয়েছে। আমি নিজে সরকারি খাদ্য বিতরণ কাজ মনিটরিং করছি। কর্মহীন হয়ে পড়া এসব দিনমজুরদের সবাইকেই খাদ্য দেয়া হবে। আমাদের খাদ্যদ্রব্যের কোন সংকট নেই। কেউ না খেয়ে থাকবে না ইনশাআল্লাহ।


   আরও সংবাদ