ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

হাট-বাজার স্থানান্তর, শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী টিম ইউএনও’র


প্রকাশ: ১১ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


হাট-বাজার স্থানান্তর, শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী টিম ইউএনও’র

   

মণিরামপুর (যশোর) সংবাদদাতা : করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা মোকাবেলায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, জনসাধারণকে করোনা মহামারী সম্পর্কে সচেতন করা, স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করা ও তা মেনে চলাসহ অসহায় ও দরিদ্র মানুষ যাতে ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা ঠিকমত পাই তার জন্য মণিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। 

উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলার এলাকাবাসী থেকে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন হাটবাজারের বিশেষ করে কাঁচা বাজারের স্থান পরিবর্তন করে অস্থায়ী ভিত্তিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ও খেলার মাঠকে বেছে নেওয়া হয়েছে। 

উপজেলার নেহালপুর স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে নেহালপুর বাজারের কাঁচা বাজার স্থানান্তর করার পরই এই আইডিয়াকে কাজে লাগিয়ে উপজেলার বিভিন্ন জনঅধ্যুষিত বাজার সমূহের আশপাশের স্কুল মাঠে এ ধরনের অস্থায়ী বাজার বসিয়ে ক্রেতাদের জনসমাগম রোধ করা সম্ভবপর হয়েছে বলে জানা গেছে।  মণিরামপুর পৌর শহরে কাঁচা বাজারে প্রতিদিন ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়ে সবার মধ্যে করোনা রোধে সামাজিক দুরত্ব বজা রাখার ব্যাপারে সংশয় দেখা দেয়। 

অনেকেই এমনও মন্তব্য করতে থাকে মণিরামপুর কাঁচাবজারে যে জনসমাগম তাতে ক্রেতা সংশ্লিষ্ট সবাইকে কেনাকাটার সাথে করোনা নিয়েই বাড়ি ফিরতে হবে। 

এ পরিস্থিতিতে অবশেষে উপজেলা প্রশাসন মণিরামপুর পৌর শহরের খুচরা কাচা বজারটি স্থানান্তরিত করে মণিরামপুর আলিয়া মাদরাসা মাঠে বসিয়েছেন। ফলে এ বাজারে সামাজিক দুরত্ব বজায় পারছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। 

অন্যদিকে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী’র আহবানে উপজেলার প্রতি ইউনিয়নে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া ১০ শিক্ষার্থী স্বেচচ্ছাশ্রমে এগিয়ে এসেছে মহামারী করোনা মোকাবেলায়। 

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ৫ লাখ জনঅধ্যূষিত দেশের বৃহত্তম এ উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষে দেখভাল করা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। করোনারোধে সামজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সরকার জন সাধারনের চলাচলে বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন। এতে করে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছে। অনেকেই এসব বিধি নিষেধ মানতে চাইছে না। 

সরকারি-বেসরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত, সঠিক তালিকা, বাইরে থেকে এলাকায় আসা মানুষের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতসহ সচেতনতা বৃদ্ধি করনে স্থানীয় বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তার পাশাপাশি প্রতি ইউনিয়নে ১০ জন  শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে এগিয়ে এসেছে। 

এজন্য উপজেলায় একটি কন্ট্রোলরুম (নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) খোলা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ এলাকার খবরা-খবর নিয়ন্ত্রণ কক্ষে আপডেট করছে। উপজেলায় একজন মেন্টর (পরামর্শদাতা) এর দায়িত্ব পালন করছে। তার মাধ্যমে প্রতি ইউনিয়নে গঠিত ১০ জনের মধ্যে একজন মেন্টরের দায়িত্ব পালন করছে। পৌরসভায় প্রতি ওয়ার্ডে ১০ জন করে সর্বমোট ৯০ জন স্বেচ্ছাসেবীর দায়িত্ব পালন করছে। 

পৌরসভার মেন্টর আক্তারুজ্জামান জানায়, পৌর শহরে ইউএনও স্যারের দিক নির্দেশনায় ৯০ সদস্যদের স্বেচ্ছাসেবী টীম গঠন করা হয়েছে। তারা সব সময় সব শ্রেণির মানুষের কল্যাণে কাজের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। 

এ টিমের উপজেলা মেন্টর আল হেলাল মামুন জানায়, ইতিমধ্যে পৌরসভাসহ উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে টীম গঠন করা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে বাকী ইউনিয়নে গঠন করা হবে। 

যারা সর্বদা যেকোনা প্রয়োজনে ইউএনও স্যারের নির্দেশে এই দূর্যোগে মানুষকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এই কাজকে বিভিন্ন সুধী মহল থেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।


   আরও সংবাদ