প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : করোনার প্রদুর্ভাব এড়াতে সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি উপেক্ষা করেই সড়কে অবস্থান নিয়ে আবারো বিক্ষোভ করেছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বাধ্য হয়েই সড়কে নামতে হচ্ছে তাদের।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজধানীর কমলাপুর, মিরপুর, বিমানবন্দরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় বিচ্ছিন্নভাবে এদিনও পাওনা আদায়ের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
কয়েকজন শ্রমিক জানান, করোনার কারণে গার্মেন্টস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেই গার্মেন্টস মালিকরা বিগত এক মাস থেকে তিন মাস পর্যন্ত বেতন-ভাতা বকেয়া রেখেছেন। হঠাৎ করে কর্মহীন শ্রমিকরা কোনো ধরনের সহায়তা পাননি, এমনকি তাদের পাওনা বেতন-ভাতা পরিশোধ করছেন না মালিকরা।
পুলিশ জানায়, গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিশ্চিত করার দায় গার্মেন্টস মালিকদের এবং বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এখন পুলিশকে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে গার্মেন্টস মালিকদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। করোনায় আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির মধ্যেই শ্রমিকরা সড়কে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন আর পুলিশকে পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর থেকে রাজধানীর কমলাপুরে সর্দার ও বিন্নি নামের দুটি গার্মেন্টস কর্মীরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তৈয়ব আলী জানান, সর্দার গার্মেন্টসের মালিককে ডেকে এনে বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। এরপর থেকে সর্দার গার্মেন্টসের কর্মীরা অবরোধ ছেড়ে চলে যায়। বিন্নি গার্মেন্টসের মালিকপক্ষকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ চেষ্টা করছে, বিষয়টি বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
দুপুরে মিরপুর এলাকার রূপনগরের মনির ফ্যাশন গার্মেন্টের শতাধিক শ্রমিক প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শ্রমিকদের দাবি, তিন দফা সময় নিয়েও মার্চের বেতন পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। বেতন পরিশোধের জন্য তৃতীয় দফায় বৃহস্পতিবার সময় নেওয়া হলেও কারখানার ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডিএমপির মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মিজানুর জানান, বেতন না পেয়ে গার্মেন্ট শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন। মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বকেয়া বেতন ভাতা ও জরুরি ত্রাণ সহায়তার দাবিতে বিমানবন্দর গোল চত্বর এলাকার সড়ক অবরোধ করেন উত্তরা দক্ষিণখান এলাকার রেদওয়ান, সিএনবি ও স্যার ডেনিম গার্মেন্টসের কর্মীরা।
পুলিশের পক্ষ থেকে তাদেরকে বার বার সড়ক ছেড়ে দিতে বলা হলেও দাবি আদায়ে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। যোগাযোগ করে মালিকপক্ষের সাড়া না পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজিএমইএকে জানিয়েছে পুলিশ।
দক্ষিণখান থানার ফাঁড়ির ইনচার্জ সবুজ রহমান বলেন, রেদওয়ান গার্মেন্টসের বেতন বকেয়া ৩ মাসের, সিএনবি ও স্যার ডেনিম গার্মেন্টসের মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের একজন কোয়ারেন্টিনে, একজন পলাতক, আরেকজন বেতন দিতে অপারগ বলে জানিয়েছেন। এ অবস্থায় বিজিএমইএ-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
ডিএমপির উত্তরা বিভাগের দক্ষিণখান জোনের এডিসি হাফিজুর রহমান বলেন, গার্মেন্টস কর্মীদের সামলানোর দায়িত্ব পুলিশের না, কিন্তু এখন সেটাই করতে হচ্ছে। আমরা গার্মেন্টস মালিকদের খোঁজ করেও পাচ্ছি না, বিজিএমইএ-কে জানানো হয়েছে।