প্রকাশ: ৬ অগাস্ট, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ব্র্যাক বাংলাদেশ ও ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসনের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তবে ‘ব্র্যাক চেয়ার এমেরিটাস’ হিসেবে ব্র্যাকের কৌশলগত পরিকল্পনার সাথে যুক্ত থাকবেন তিনি।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ব্র্যাকের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে, স্যার ফজলে হাসান আবেদের অবসরের পর ব্র্যাক বাংলাদেশ ও ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল পরিচালনা পর্ষদের নতুন চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করবেন যথাক্রমে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ ও পলিসি বিশেষজ্ঞ ডা. হোসেন জিল্লুর রহমান এবং জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আমিরা হক।
নতুন নেতৃত্বের কাছে সংস্থাটির পরিচালনার দায়িত্বভার ছেড়ে দেওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ।
স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘গত কয়েক বছর আমি ব্র্যাকে আমার পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে ভেবেছি এবং সেইমতো প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন আমার বয়স ৮৩ বছর। ব্র্যাককে সামনে এগিয়ে নেওয়ার কাজে যথাযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি ছিল আমার সিদ্ধান্তের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গর্ব ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, যেনো আমার অবর্তমানেও ব্র্যাক তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্র্যাক কখনোই আমি বা কোন ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান ছিল না। আমি এর প্রতিষ্ঠাতা ঠিকই, কিন্তু ব্র্যাকের সুদৃঢ় ভিত্তি ও সুনাম তৈরি করেছেন এর নিবেদিত কর্মীরা, তাদের প্রত্যয় ও কর্মনিষ্ঠা দিয়ে। এতো বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার, সমমনা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, দাতা-সংস্থা এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। আগামী দশ বছর পরে আমরা আমাদের কাজের প্রভাব পৃথিবীতে আরও বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমি স্বপ্ন দেখি, ব্র্যাক আগামীতে আরও বড় হয়ে উঠবে, নতুন উদ্ভাবন চালয়ে যাবে, নতুন দিনের প্রয়োজনে এগিয়ে আসবে নতুন সমাধান নিয়ে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালে ৩৬ বছর বয়সে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। ৬৫ বছর বয়সে নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব থেকে অবসর নেওয়ার পর তাকে চেয়ারপারসন নির্বাচিত করেন ব্র্যাকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ। পরবর্তীতে তিনি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের তত্ত্বাবধায়ক পর্ষদেরও চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ছোট একটি ত্রাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৯৭২ সালে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। গত ৪৭ বছরে বিশ্বজুড়ে অন্তত ১১ কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে ব্র্যাক পরিণত হয় বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও কার্যকর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায়। ব্র্যাকের উন্নয়ন ব্যবস্থার আওতায় রয়েছে সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ, মাইক্রোফাইন্যান্স, উচ্চশিক্ষা, বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন কর্মসূচি। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের ১১টি দেশে বিস্তৃত রয়েছে সংস্থাটির কার্যক্রম। এছাড়াও ব্র্যাকের অ্যাফিলিয়েট কার্যালয় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে এবং যুক্তরাজ্যে।