ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৮ শতাংশ রোগী : ফ্লোরা


প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৮ শতাংশ রোগী : ফ্লোরা

   

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮৩৮। শনাক্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ রোগীই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

বাকি ৩২ ভাগকে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালের শরণাপন্ন হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটায় মহাখালীর ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগের মিলনায়তনে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে যুক্ত হয়ে এসব তথ্য জানান মীরজাদী। 

করোনা শনাক্তদের যে ৩২ শতাংশ হাসপাতালে আছে তাদের সবারই হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না উল্লেখ করে মীরজাদী বলেন,  যারা হাসপাতলে আছেন তারা বিভিন্ন কারণে এসেছেন। এর মধ্যে সামাজিকভাবেও তাদের ওপর একটা চাপ থাকে, তারা যেন বাড়িতে না থেকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। কিন্তু জরুরি না হলে তার প্রয়োজন নেই বলে জানান মীরজাদী।

করোনা আক্রান্তদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের উদ্দেশ্যে আইইডিসিআর-এর এই পরিচালক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে সারা বিশ্ব একজন রোগী যদি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে পারেন সেটিকে উৎসাহ দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে রোগী বাড়িতেই একটি কক্ষের মধ্যে হোম আইসোলেশনে থাকবেন। আইসোলেশন যথাযথভাবে পালন করতে হবে। তার সঙ্গে পরিবারের অন্য কারো যেন মেলামেশা না হয় সেই বিষয়টা নিশ্চিত করবেন। প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব যারা আছেন তারাও সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারেন। যাদের মৃদু উপসর্গ আছে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হলে হাসপাতালের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এতে যাদের প্রকৃত অর্থেই হাসপাতালে যাওয়া প্রয়োজন তাদের সেবা দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। 

মীরজাদী জানান, বয়স বিভাজন অনুসারে শনাক্তদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে ২১ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৯ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৫ শতাংশ রয়েছেন। নারী-পুরুষ বিভাজন অনুসারে, শনাক্তদের শতকরা ৬৮ শতাংশই পুরুষ, ৩২ শতাংশ নারী। আক্রান্ত এলাকা অনুসারে শতকরা ৪৬ শতাংশ ঢাকার অধিবাসী। এরপরই আছে নারায়ণগঞ্জের ২০ শতাংশ। গাজীপুরেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম ও মুন্সীগঞ্জেও রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান তিনি।

ফ্লোরা বলেন, ঢাকা শহরের মধ্যে আক্রান্ত ও সংক্রমণের বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এখানে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মিরপুরে। আমরা শুরুর দিকেও টোলারবাগে বেশি আক্রান্ত দেখেছিলাম। এখন মিরপুরের বিভিন্ন অঞ্চল এবং টোলারবাগের পুরোটা এলাকা ধরে যদি বলি, আক্রান্তদের শতকরা প্রায় ১১ শতাংশ এ অঞ্চলের। এরপরে মোহাম্মদপুর এলাকায় আছেন আক্রান্তদের শতকরা ৪ শতাংশ। ওয়ারী এবং যাত্রাবাড়ীতে শতকরা ৪ শতাংশ। এছাড়া উত্তরায় শতকরা ৩ ও ধানমন্ডিতে ৩ শতাংশ সংক্রমিত ব্যক্তি রয়েছেন। 

এদিকে এদিন নিজ বাসা থেকে করোনার অনলাইন বুলেটিনে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সরকারি হিসেবে করোনায় দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৫ জনে। এছাড়া শেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মোট শনাক্ত ১ হাজার ৮৩৮ জন। শনাক্তদের মধ্যে নতুন করে সুস্থ হয়েছে ৯ জন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সেরে উঠেছেন ৫৮ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ২৪৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ১৯০টি পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। দেশে এখন পর্যন্ত মোট ১৯ হাজার ৭৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, ও ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এম আইএস) বিভাগের পরিচালক ড. মো. হাবিবুর রহমানও অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে যুক্ত ছিলেন।


   আরও সংবাদ