ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চিকিৎসা নাই, চারিদিকে কেবলই মানুষের আর্তনাদ : রিজভী


প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


চিকিৎসা নাই, চারিদিকে কেবলই মানুষের আর্তনাদ : রিজভী

   

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হয় গত ৮ মার্চ। তারপর সরকার রোগটি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় পেলেও সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। 

করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউতে ভেন্টিলেটর মেশিন ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের সুবিধাসহ পৃথক হাসপাতাল স্থাপন করতে পারেনি। সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ না করায় বাড়ছে রোগীদের দুর্ভোগ ও মৃত্যুহার। মূলত সারাদেশে করোনার কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। চারিদিকে মানুষের কেবলই আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে।

শনিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে ভিডিও প্রেস কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে প্রায় দেড় মাস আগে। এরমধ্যেও একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়নি। হাসপাতাল প্রস্তুতির যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে সেখানেও যথেষ্ট ঘাটতি আছে। বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিবর্তে নির্বাচন করা হয়েছে আউটডোর ক্লিনিক। সেখানে অক্সিজেনের সুবিধা-অপারেশন থিয়েটার নেই।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের মহামারিতে বিশ্ববাসী আজ দিশেহারা। বাংলাদেশে বিরাজ করছে ভয়াল পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতা ও হেয়ালীপনার কারণে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়ে প্রতিদিন দেশজুড়ে বিস্তার ঘটছে এ মহামারির। বিশ্বে ভয়াবহ সংক্রমিত দেশগুলোতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু দ্বিগুণ হয়েছে ১৫-২০ দিনে। আর বাংলাদেশে তা হচ্ছে মাত্র ৪ দিনে।

রিজভী বলেন, করোনা প্রতিরোধে মেডিক্যাল সরঞ্জামের বিষয়ে কেউ যেন কথা বলতে না পারে সেজন্য শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সরকার কঠোর পরিপত্র জারি করেছে। সরকার তাদের ব্যর্থতা ধামাচাপা দেয়ার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র দিয়ে দমনের নীতিকেই কার্যকর করছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি কতটা ভয়ংকর হতে পারে তা এখন পর্যন্ত কেউ অনুধাবন করতে পারছে না। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে জনগণ জানতে পারছে না আসলে হচ্ছেটা কি?

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস ইস্যু নিয়ে জনগণের সঙ্গে লুকোচুরি করার মানে হচ্ছে, মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলা। জনগণের জীবন নিয়ে জুয়া খেলবেন না। আমরা দেখলাম, সরকার গত ১৬ এপ্রিল সারাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে। ‘সারাদেশ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’ এটি বুঝতে সরকারের কেন এতো দেরি হলো এটি বোধগম্য নয়। কিন্তু মানুষকে বাঁচাতে হলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। 

রিজভী বলেন, গত ২৪ মার্চ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেয়া বক্তব্যে কয়েকটি প্রস্তাবনা ছিল: অবিলম্বে দেশে ‘চিকিৎসা জরুরি অবস্থা অর্থাৎ মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি’ঘোষণা, ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের কাজকে অত্যাবশ্যকীয় ঘোষণা এবং বিশেষ বোনাস প্রদান। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পর্যাপ্ত সংখ্যক সেফটি মেডিক্যাল কিটস অর্থাৎ পিপিই সরবরাহ। 

দেশের প্রতিটি উপজেলায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। প্রবীণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের চিকিৎসা সেবায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ। করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষি শ্রমিক, গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানার শ্রমিক এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আর্থিক সহায়তার উদ্দেশে দ্রুততার সঙ্গে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।

তিনি বলেন, যতই দিন যাচ্ছে, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেয়া প্রতিটি প্রস্তাবনার গুরুত্ব ও বাস্তবতা ততই প্রতিভাত হয়ে উঠছে।

বিএনপির কোন প্রস্তাবনাটি অযৌক্তিক কিংবা অন্যায্য প্রশ্ন করে বিএনপির এ নেতা বলেন, বিএনপি শুধু প্রস্তাবনা দিয়েই বসে থাকেনি। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সারাদেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থক ছাড়াও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এবং ড্যাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে আমাদের দলের নেতাকর্মী, সমর্থকরা দুস্থ-গরিব মানুষদের খাদ্য সহায়তা, মেডিক্যালের ডাক্তার ও নার্সদের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা হচ্ছে।


   আরও সংবাদ