ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ ভাদ্র ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

‘লকডাউন’ উপেক্ষা করে বরিশালে মদ বিক্রি করল অধিদপ্তর


প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


‘লকডাউন’ উপেক্ষা করে বরিশালে মদ বিক্রি করল অধিদপ্তর

   

বরিশাল সংবাদদাতা : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের ‘লকডাউন’ ঘোষণা উপেক্ষা করে লোক জড়ো করে মদ বিক্রি করেছে বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

জনসমাগমের সেই ছবি তুলতে গিয়ে ওই দপ্তরের কর্মচারীদের মারধরের শিকার হয়েছেন বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাপারসন কামাল হাওলাদার। ভাঙচুর করা হয়েছে তার ক্যামেরা ও মোবাইল।

ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মদ বিক্রির জন্য শনিবার সকাল থেকে বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের মধ্যে পিরোজপুরের ডিলার দিলীপসহ অনেক লোক জড়ো হন। যে খবর পেয়ে বেসরকারি ওই টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাপারসন সেখানে যান। ঘটনার ভিডিও ধারণের সময় তাকে অধিদপ্তরের কর্মচারীরা মারধোর করেন এবং ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন।

জানা গেছে, উপস্থিত ৪/৫ জনের কাছে মদের লাইসেন্স থাকলেও বাকি প্রায় দেড়শ’ লোকের কোনো লাইসেন্স ছিলো না। লাইসেন্সবিহীন এসব লোকের কাছে অতিরিক্ত দামে কেরু কোম্পানির মদ বিক্রি করা হচ্ছিল।

বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের বরিশাল প্রতিনিধি শাহিন হাসান জানান, এই ঘটনায় বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক বরারর একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। 

সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে জনসমাগম তৈরি করে মদ বিক্রি করা হচ্ছিলো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মধ্যে। পিরোজপুর জেলার মদের ডিলার দিলীপ সেখানে মদ কিনতে আসেন।

এছাড়া বরিশাল ও বিভিন্ন জেলার লাইসেন্সবিহীন ব্যক্তিদের কাছে মদ বিক্রির খবর পেয়ে মিডিয়াকর্মীরা সেখানে ছুটে যায়। এ সময় কম্পাউন্ডের ভেতরে থাকা শতাধিক মাদক ক্রেতার মাদকসহ ছবি তোলার চেষ্টা করা হলে ওই কার্যালয়ের ওয়্যারলেস অপারেটর হাসিব, ড্রাইভার রাজন ও আউটসোর্স রাকিবসহ ৫/৬ জন ক্যামেরাপারসন কামাল হাওলাদারের ওপর হামলা চালায় এবং মারধর করে। পরে তার ক্যামেরা ও মোবাইল ভাঙচুর করে তারা।

এই বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরিশাল কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক হাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তিনি কিছু জানেন না। তবে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হচ্ছে। তারা দাপ্তরিক নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এদিকে সংবাদকর্মীর ওপর এ হামলার ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।


   আরও সংবাদ