ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ ভাদ্র ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

যুবদের জন্য গ্রামে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ


প্রকাশ: ২০ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


যুবদের জন্য গ্রামে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ

   

স্টাফ রিপোর্টার : করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাসের মরণ ছোবলে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বে লক্ষাধিক মানুষ মারা গিয়েছে। দিন দিন করোনা সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধিই পাচ্ছে।  করোনা সংক্রমণে শুধু মৃত্যুই হচ্ছে না, অর্থনীতির উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। 

বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এর প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন, বিনোদন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যাংক ও বীমা খাত এবং কলকারখানার উৎপাদন স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিঘাত হিসেবে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ কর্মী বেকার হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাত্তোর বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যাপক মন্দা দেখা দিতে পারে। এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়েছে এবং দিন দিন তা দৃশ্যমান হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প ও বিদেশে কর্মরত শ্রমিক ভাইদের পাঠানো অর্থ দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রাণ সঞ্চার করে আসলেও করোনার কারণে উক্ত দুটি খাতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। এসমস্ত বেকার মানুষের দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব।

করোনার প্রভাবে যারা গ্রামে ফিরে গেছেন তাদের হয়তো অনেকেই কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়বেন। তাদের জন্য করোনা পরবর্তীতে দ্রুত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে এমন বিষয়ে প্রকল্প গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকল্প গ্রহণের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। 

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ‘করোনাত্তোর পরিস্থিতিতে যুবদের জন্য গ্রামে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ’-শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রস্তুত করে।  

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব আখতার হোসেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপচিালক জনাব আখতারুজ জামান খান কবির এবং মন্তণালয় ও অধিদপ্তরের ‍উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সচিব মহোদয় বলেন করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ গ্রামে ফিরে গেছেন। তাদের অনেকেই হয়তো আর পূর্বের কর্ম ফিরে পাবেন না। এ পরিস্থিতিতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দ্রুত উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। 

তিনি সকলকে প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিষয়ে মতামত প্রদানের আহবান জানান। সচিব মহোদয়ের আহবানের প্রেক্ষিতে সভায় উপস্থিত সকল কর্মকর্তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে তাদের মূল্যবান মতামত পেশ করেন।

প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হলো-
১.যুবদের শহরমুখি প্রবণতা রোধ করে গ্রামেই আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি।
২.কর্মপ্রত্যাশি যুবদের আয় বর্ধণমূলক কাজে নিয়োতিকরণের মাধ্যমে গ্রামীণ  দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করা।
৩.বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
৪.কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যাৎপাদন বৃদ্ধি করা।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মাধ্যম পারিবারিক কৃষি ও জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ (মৎস্য,পোল্ট্রি,লাইভ স্টক, কৃষি) ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। ট্রেড ভেদে প্রশিক্ষণের মেয়াদ হবে ১০-২৮ কর্মদিবস (৬০-১৬৮ ঘন্টা)। যুব সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও গ্রামীণ দারিদ্র্য হাসকরণে নিয়োজিত করণের বিষয় প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

মহাপরিচালক, সকলের মতামত একীভূত করে অতিদ্রুত প্রকল্পটি দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে  তাঁরই সুযোগ্য তনয়া প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জাতি করোনা ধকল কাটিয়ে দ্রুতই দেশের অর্থনীতিকে সাবলীল ধারায় ফিরে নিয়ে আসবে-এ আশাবাদ ব্যক্ত করে সকলের সুস্বাস্থ্য  ও মঙ্গল কামনা করে সচিব সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।


   আরও সংবাদ