প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন
গাজীপুর সংবাদদাতা : প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে জনসাধারণের চলাচলের জন্য দুইটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়।
গত সোমবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে তা ভেঙে দেয় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৯নং-ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাছির উদ্দিন মোল্লা। এ নিয়ে এলাকাবাসী তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তবে বর্তমানে লকডাউন বা রাস্তা বন্ধ করতে হলে জেলা প্রশাসক, এসিল্যান্ড ও ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু এসবের তোয়াক্কা না করেই তিনি এসব কি করলেন চলুন দেখা যাক।
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি দক্ষিণ আমবাগ খলিল নগর এলাকায় দুটি কাঠের সাঁকো ভেঙে দেয়া হয়েছে।
গত বৎসরে এলাকাবাসী নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে প্রায় ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে কাঠ দিয়ে দুইটি সাঁকো নির্মাণ করেন। এর পর থেকে প্রতিদিন সাঁকো দুটি দিয়ে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিকসহ নানা পেশার লোকজন অল্পসময় ও সহজেই পারাপার হন।
গত সোমবার নাছির উদ্দিন মোল্লা তাঁর লোকজন পাঠিয়ে দিয়ে সাঁকো দুটি ভেঙে দেয়। ফলে চলাচলের ক্ষেত্রে বড় সমস্যায় পড়েন কয়েক এলাকার জনসাধারণ।
স্থানীয়রা যা বলেন, আমবাগ থেকে কেনাবাড়িতে সহজ, অল্প সময়ে (শর্টখাটে) যাওয়ার মূল মাধ্যম ছিল ওই কাঠের দুই সাঁকো। সময় বাঁচাতে এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা ছিল সাঁকো দুটি। কোনো ভেঙে দিয়েছে তা এলাকাবাসীকে জানায়নি কাউন্সিলর নাছিরউদ্দিন মোল্লা।
আমাবাগের এক শ্রমিক লীগ নেতা জানান, নাছিরউদ্দিন হচ্ছে, ৯-নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সে ১০নং ওয়ার্ডে এসে কিসের মাতবরী করে? ওই শ্রমিক নেতা আরো বলেন, বর্তমানে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের লকডাউন চলছে। যত নিরিবীলি রাস্তা দিয়ে চলা যায় ততোই ভালো।
সাঁকো দুটি দিয়ে ভিড় ছাড়াই নিরিবীলি চলাচল করা যেতো। কিন্তু নাছির ওই সাঁকো দুটি ভেঙে দিয়ে কি তিনি করোনা ভাইরাস দুর করলো না কি আরো বিপদে ফেলে দিল কোনোটা?
কোনাবাড়ির এক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা জানান, ৫৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে কোনাবাড়ির নাছিরউদ্দিন মোল্লা সবচেয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করছে। প্রতি মাসে তাঁর বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি দেখছি বড্ড বেরে গেছে। তিনি আরো বলেন, নাছিরের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ অটোরিকশা, পলাশ পরিবহন ও ময়লার ভাগার থেকে চাঁদাবাজি করে শুনি।
ওই নেতা বলেন, কোনাবাড়ি থানায়তো তাঁর বিরুদ্ধে পলাশ পরিবহনের চাঁদাবাজির মামলাও হয়েছে। তবে আমবাগের কাঠের সাঁকো ভেঙে দেয়া ঠিক হয়নি।
এলাকার আবুল বাশার জানান, আমবাগ ব্রিজে এখন বেশি চাপ পড়বে। প্রতিদিন দেড়-থেকে দুই হাজার লোকজন ওই সাঁকো দিয়ে আসা-যাওয়া করতেন। এখন যেহেতু ভেঙে দিয়েছে আমাবগ ব্রিজ ছাড়া আর বিকল্প রাস্তা নেই। দুই সাঁকোর লোকজন এখন আমবাগ ব্রিজ দিয়ে চলবে। তাতেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝঁকি রয়েছে।
এলাকার শ্রমিকেরা জানান, খুব সহজেই ভেঙে দিল সাঁকো দুটি। তাঁরা কাঠের এই সাঁকো দুটি দিয়ে পার হতেন এবং কারখানা যেতেন। দুপুরে বাসায় এসে তাঁরা খাবার খেয়ে আবার এক ঘন্টার মধ্যেই কারখানায় পৌঁছে যেতেন। কিন্তু সাঁকোটি ভেঙে দেয়ায় এখন আমবাগ ব্রিজ দিয়ে যেতে হবে তাতে অনেক সময় লাগে। নাছির অতিরিক্ত করেছে।
আগামীতে ওইডারে ভোট দিতাম না। ব্যাপারটি নিয়ে ওই কাউন্সিলরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।