ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ ভাদ্র ১৪৩১, ৮ শাওয়াল ১৪৪৫

এডিসি জাহাঙ্গীর করোনা যোদ্ধাদের উৎসাহ যোগাচ্ছেন


প্রকাশ: ৪ মে, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


এডিসি জাহাঙ্গীর করোনা যোদ্ধাদের উৎসাহ যোগাচ্ছেন

   

বিশেষ প্রতিনিধি : করোনা মহামারী মোকাবেলায় দেশের অসহায় মানুষ খুব কষ্টে দিন পার করছে। সবাই যে য়ার মতো চেষ্টা করছেন অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার। কিন্তু বর্তমানে সবচেয়ে বেশি মানবিক ও পেশাদার কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশ।

পুলিশের মানবিক কার্যক্রমে সর্বমহলে প্রশংসা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ডিএমপি’র এরকম একজন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা এডিসি জাহাঙ্গীর আলম। করোনা মহামারী মোকাবেলায় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রমে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বর্তমানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পিওএম-পশ্চিম) ও অতিরিক্ত দায়িত্বে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (কোয়ার্টারমাস্টার- পিওএম বিভাগ), ডিএমপি, মিরপুরে কর্মরত আছেন। ঢাকায় কর্মরত থেকেও তার নিজ গ্রামের পরিচিতি ও অপরিচিত অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

তাঁর গ্রামের অসহায় মানুষ তাঁকে ফোন করে জানান, তারা ঢাকায় অনেক কষ্টে আছেন। তাই নিজ উদ্যোগে ঢাকায় তাঁর গ্রামের ১৭ জনকে তিনি খাদ্যসামগ্রী দেন। 

তিনি জানান, সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছেন ঢাকায় আটকে পড়া তাঁর গ্রামের অসহায় মানুষের পাশে থাকবার এবং ভবিষ্যতেও এ কার্যক্রমে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখবেন।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য হিসেবে তিনি গর্ববোধ করেন, যখন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেখতে ও শুনতে পাচ্ছেন দেশের প্রতিটি জেলায় পুলিশ সদস্যগণ জনগণের খুব কাছের মানুষ হয়েছেন এবং দেশে প্রতিটি ঘরই যেন পুলিশের পরিবার। পেশাদারিত্বের কারনেই হোক আর ব্যক্তি উদ্যোগেই হোক, জনগণের খুব কাছে থেকে কাজ করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করেন এডিসি জাহাঙ্গীর। 

উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, বাংলাদেশ পুলিশের সম্মানিত আইজিপি মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় পুলিশের প্রত্যেক সদস্য আজ মানবিক পুলিশ, পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ অবদানে মানুষের পাশে আছে সবসময়। আমরা ৫ জন সহকর্মীকে হারিয়েছি, তাদের আত্মত্যাগের কথা আজীবন স্মরণ করবে দেশের প্রতিটি মানুষ ও বাংলাদেশ পুলিশ।

পুলিশের প্রত্যেক সদস্যের পাশে থেকে সাহস ও শক্তি যোগাচ্ছেন আমাদের আইজিপি মহোদয়সহ সকল ইউনিট প্রধানগণ। আমরা সেই শক্তি ও সাহস পেয়ে পুলিশের প্রত্যেক সদস্য আজ উজ্জীবিত। তাইতো আমরা এখন যে যার অবস্থান থেকে পেশাদারিত্বের পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে, ব্যক্তি উদ্যোগে করোনা মহামারী মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছি। নিজ সহকর্মী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পরিবার ও দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছু করবার ইচ্ছে হয় তাঁর। আর তাইতো নিজ পেশার মাধ্যমে মানবিক কাজগুলো করবার চেষ্টা করে যাচ্ছেন ডিএমপি’র এ পুলিশ কর্মকর্তা।
 
এ মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা এডিসি জাহাঙ্গীর দৃঢ়ভাবে জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত কমিশনার মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিজ কর্মস্থলে সম্পূর্ণ পেশাদারিত্বের সহিত ও মানবিকতার সমন্বয়ে প্রত্যেক সহকর্মীকে সচেতন হতে, নিজেকে নিরাপদ রাখতে প্রতিনিয়ত দিকনির্দেশনা ও অনুরোধ জানাচ্ছি। নিজ কর্মস্থলের পুলিশ সদস্যদের এবং সুরক্ষা সামগ্রী দিচ্ছি, অসুস্থ পুলিশ সদস্যদের খোঁজ খবর নিচ্ছি ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাসহ মিরপুর পুলিশ লাইনের সদস্যসহ বিভিন্ন বিভাগের অসুস্থ এবং কোয়ারান্টাইনে থাকা পুলিশ সদস্যদের নিয়মিত খোঁজখোবর নিচ্ছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

এসব পুলিশ সদস্যদের পুষ্টিমান সম্পন্ন উন্নত খাবার সরবরাহে দিন- রাত পরিশ্রম ও নিয়মিত তদারকি করছেন। এ পুলিশ কর্মকর্তা নিজ কর্মস্থলে অত্যন্ত আন্তরিকভাবে পুলিশ সদস্যদের পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার ব্যবস্থাপনায় নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছেন এবং সিনিয়র কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনায় তাৎক্ষণিক চমৎকারভাবে তা বাস্তবায়ন করছেন। 

তার চমকপ্রদ উদাহরণ হলো, দুই সপ্তাহ যাবৎ তিনি মিরপুর পুলিশ লাইন্সের পুলিশ সদস্যসহ অসুস্থ ও কোয়ারান্টাইনে থাকা সকল পুলিশ সদস্যদের জন্য রাঙ্গামাটি থেকে এক ট্রাক আনারস এবং দেশ- বিদেশের নামকরা বিভিন্ন ব্রান্ডের কয়েক মণ “ভিটামিন সি” সমৃদ্ধ শরবতের পণ্য ক্রয় করে তা পুলিশ সদস্যদের নিয়মিতভাবে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। 

দুই সপ্তাহ যাবৎ রাঙ্গামাটির সুস্বাদু আনারস ও “ভিটমিন সি” সমৃদ্ধ শরবত দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ডিএমপির পুলিশ সদস্য ও কোয়ারান্টাইনে থাকা অসুস্থ পুলিশ সদস্যগণ খাদ্য তালিকায় পেয়ে এবং সুষ্ঠু খাবার ব্যবস্থাপনায় ডিএমপির পুলিশ সদস্যগণ অত্যন্ত আনন্দিত। 

ডিএমপি’র পুলিশ সদস্যগণ কমিশনার অনুমোদিত খাবার মেন্যুতে দুধ, ডিম, কলা, মাছ, মুরগি, গরুর মাংস, খাসির মাংস ও সবজিসহ নানা উন্নতমানের পুষ্টমান খাবার খেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। এছাড়াও এ মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা দেশের এই প্রেক্ষাপটে পুলিশ সদস্যদের সুষম খাবার ব্যবস্থা ও সরবরাহে সৃষ্টিশীল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে QRT (Quick Response Team) গঠন করেছেন এবং পুলিশ সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

এডিসি জাহাঙ্গীর নিজ উদ্যোগে অসহায় মানুষের কল্যাণে পাশে থাকবার চেষ্টা করছেন প্রতিনিয়ত। এছাড়াও “ত্রিমাত্রিক-৩০ বিসিএস অফিসার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড” এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে সংগঠনকে করোনা মহামারী মোকাবেলায় অনন্য অবদান রাখার প্রয়াস অব্যাহত রাখতে কল্যাণ কার্যক্রমে সকলকে সম্পৃক্ত ও সহযোগিতার আহবান জানাচ্ছেন। 

ত্রিমাত্রিক-৩০ বিসিএস এর সভাপতি হিসেবে নিজ উদ্যোগে পরিচিত ডাক্তার বন্ধুসহ “কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে’র পরিচালকের কাছে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে কিছু “সুরক্ষা সামগ্রী” পাঠিয়েছেন। করোনা মহামারী মোকাবেলায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে এডিসি জাহাঙ্গীর নিজেকে মানবিক করে তোলার পাশাপাশি সামাজিকভাবে মানুষকে সচেতন করছেন এবং করোনা যোদ্ধাদের উৎসাহ যোগাচ্ছেন।

দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে প্রতিটি মানুষ মানবিক হবে এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের। বাংলাদেশ পুলিশ তথা ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো এবং মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা এডিসি জাহাঙ্গীর এর জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন অনেকেই।


   আরও সংবাদ