ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

নিরাপত্তা প্রহরী দ্বারা যবিপ্রবি শিক্ষক লাঞ্চিত


প্রকাশ: ১১ মে, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


নিরাপত্তা প্রহরী দ্বারা যবিপ্রবি শিক্ষক লাঞ্চিত

   

যবিপ্রবি থেকে নাজিম : কর্মরত নিরাপত্তা প্রহরীর কাছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সামাদকে লাঞ্ছনার ঘটনা ১৭ দিন পার হলেও বিচার পাননি শিক্ষক। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে শিক্ষক সমিতির কাছে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সামাদ অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ২৪ এপ্রিল করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় লকডাউন করা হয়। সে জন্য তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তা মুন্সী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করার জন্য বাজারে যান। বাজার শেষে বিকাল আনুমানিক ৩.৫০ মিনিটে একজন গ্যাসের চুলা মিস্ত্রীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং প্রয়োজনীয় কাজ করান। কাজ শেষে বিকাল ৪.১০ মিনিটে গ্যাসের চুলা মিস্ত্রী যখন শিক্ষক ডরমিটরির নিচে আসেন তখন দুজন আনসার সদস্য আনসার সমীর ও জাহাঙ্গীর তাকে গালিগালাজ করেন এবং মারতে উদ্যত হন। তখন শিক্ষক বিষয়টি জানতে চাইলে শিক্ষককে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেন এবং অশ্রাব্য, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। 

শিক্ষক বিষয়টি জানাতে নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ঘটনাস্থলে আসতে বললে তিনি আসেননি। তারপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে অবস্থান করার পর নিরাপত্তা কর্মকর্তা আসলে তাদের কথা হয় তখন তিনি (নিরাপত্তা কর্মকর্তা) জানতে চান কেন শিক্ষক মটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, এ ঘটনার তদন্তের জন্য ডিনসহ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলামকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার ১৭ দিন পার হলেও এখনও বিচার পাননি ভুক্তভোগী শিক্ষক।

এ বিষয়ে যবিপ্রবির নিরাপত্তা কর্মকর্তা মুন্সী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, ‘বিষয়টি খুব দুঃখজনক, পরবর্তীতে যখন আমি জানতে পারি তখন প্রশাসনের নির্দেশে আনসার সদস্যদেরকে ডরমিটরির সামনে গিয়ে প্রকাশ্যে তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চায়। কিন্তু পরে জানতে পারি স্যার তখন ক্যাম্পাসে ছিলেন না। করোনা পরিস্থিতির জন্য কোনো আনসার সদস্যকে এই মুহূর্তে ছুটি বা অন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।’

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ড. আমজাদ হোসেন জানান, ‘শিক্ষক আব্দুস সামাদ যখন বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন তখন আমি সকল শিক্ষকগণের সাথে যোগাযোগ করে শিক্ষক সমিতি থেকে বিচার চেয়ে রেজিষ্ট্রার বরাবর প্রতিবাদ লিপি দিই। কোনো শিক্ষকের সাথে কেউ এমন ন্যাক্কারজনক আচরণ করবে এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা এটার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ‘ঘটনাটি ঘটার পর শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, ভুক্তভোগী শিক্ষক আব্দুস সামাদ ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিষয়টি জানান। ঘটনাটি খুব দুঃখজনক, আনসার সদস্যরা কোনোভাবে শিক্ষকদের আবাসিক এলাকায় ঢুকে কোনো শিক্ষকের সাথে খারাপ আচরণ করতে পারেন না। আমি তখনই  দুই আনসার সদস্যকে দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করার জন্য নির্দেশ দিই। 

মৌখিকভাবে ওই শিক্ষকের বিভাগীয় দুই জৈষ্ঠ্য শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঘটনাটির তদন্ত করার জন্য। আর সম্পূর্ণ প্রশাসনিক উপায়ে ক্যাম্পাস না খুললে তদন্ত সম্ভব নয়। মৌখিকভাবে গঠিত তদন্ত কমিটির ফলাফল এখনও আমার কাছে আসেনি, আসলে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।’


   আরও সংবাদ