প্রকাশ: ১৮ মে, ২০২০ ০০:০০ পূর্বাহ্ন
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : করোনার ভয় উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসা ডা রিমা খাতুন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর কাছে চাঁদা না পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছে একটা কুচক্রী মহল। স্থানীয় একটা হাসপাতালে চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় তাকে ভুঁয়া ডাক্তার প্রমাণে উঠে পড়ে লাগে ঐ মহল। সিরাজগঞ্জের পিপুলবাড়িয়া বাজারের দত্তবাড়ি রোডে নিজ চিকিৎসালয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে ডা রিমা এ ষড়যন্ত্রের শিকার হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিপুলবাড়িয়া বাজারের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন তিনি। সেখানে আট হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন। পরে সেখানে বনিবনা না হওয়ায় চাকরি বাদ দিয়ে নিজস্ব চেম্বার খুলে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। কতিপয় চিকিৎসালয় ব্যতীত করোনার ভয়ে ঐ এলাকার বেশিরভাগ চিকিৎসালয় যেখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন সেখানে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। এতে এই কঠিন সময়ে সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউড(ম্যাটস) কোর্স কমপ্লিট করার পাশাপাশি বিএমডিসি কর্তৃক রেজিষ্ট্রেশন করেছেন তিনি। তার রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ডি-১৫২২৮।
এ ঘটনায় ডা রিমা অভিযোগ করেন, তাকে ভুয়া আখ্যায়িত করে তার কাছে টাকা দাবি করেন স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক শাহিন রেজা। টাকা না দেওয়ায় অনলাইন পোর্টাল 'প্রতিদিনের সময়' এ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ না ছাপিয়ে অসত্য সংবাদ উপস্থাপন করেন তিনি।
এছাড়াও নিউজ করার ভয় দেখিয়ে স্থানীয় লোকজনের কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ডা রিমা বলেন, যেখানে অনেক বড় বড় ডাক্তার চেম্বার করা বাদ দিয়েছেন সেখানে তিনি আন্তরিকতার সাথে রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে কিছু কুচক্রী মহল আমাকে ভূয়া ডাক্তার আখ্যায়িত করে আমার বিরুদ্ধে অনলাইন পোর্টালে অসত্য প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। পরের দিন একই বিষয় কপি করে স্থানীয় 'যুগের কথা' পত্রিকায় একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে।
ঐ রিপোর্টে 'দি ইনসাফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জড়ালেও তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ডাক্তার রিমার সাথে 'দি ইনসাফ ডায়াগনস্টিক সেন্টােরের কোনো সম্পর্ক নেই। অন্যান্য ডাক্তার দিয়ে দি ইনসাফ এ রোগী দেখানো হয়। ডাক্তার রিমার সাথে দি ইনসাফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের যে যোগসাজগের কথা ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিমা বলেন, আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্যই এরকম কাল্পনিক ও মিথ্যা রিপোর্ট লেখা হয়েছে। অথচ এ বিষয়ে ২৮/০৫/২০১৫ তারিখ মহামান্য হাইকোর্টে ডিএমএফ ডাক্তারগন একটা রিট দায়ের করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৮/১১/২০১৫ তারিখে রুল জারি করে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ডিএমএফ ডাক্তার তাদের নামের পূর্বে ড: লিখতে পারবে।এখনো এ রিট চলমান।
এরকম একটা রিপোর্ট করার আগে এবিষয়গুলো অনুসন্ধান করা জরুরী ছিল বলে জানান তিনি। তা না করে অন্যের দেয়া কপি ছেপে একজন ডাক্তার এর মান ক্ষুণ্ণ করা কতটুক যুক্তিযুক্ত? যেখানে করোনা মহামারিতে আমাদের দেশ বিপদে। সেখানে আমরাও বিপদমুক্ত নই। এরকম একটা সময়ে ডা: দের উৎসাহ দেয়ার পরিবর্তে হয়রানি করা মানে হলো দেশ ও মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া।
যেখানে প্রধানমন্ত্রী জনগণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত কারার জন্য এবং চিকিৎসকদের চিকিৎসা দেয়ায় উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। অথচ স্থানীয় অসাধু এসব চক্র চিকিৎসকদের হয়রানি করে বেড়াচ্ছেন। এ ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ডা রিমা ও স্থানীয়রা।