ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

এনআইবি’তে স্যাঙ্গার পদ্ধতিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়


প্রকাশ: ১৮ মে, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


এনআইবি’তে স্যাঙ্গার পদ্ধতিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়

   

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে বেসরকারিভাবে যে দুটি প্রতিষ্ঠান এ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন করেছে তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে মহাপরিচালক মহোদয় বলেন যে, এনআইবির উন্মোচিত জিনোম সিকোয়েন্স Gold standard method ‘Sanger Dideoxy method’ এ করা। এ পদ্ধতিতে নির্ণীত জিনোম সিকোয়েন্স প্রায় শতভাগ নির্ভুল।

বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের মহামারী রোধে প্রয়োজনীয় গবেষণা কার্যক্রম যেমন, SARS-CoV-2 ভাইরাসের সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয় এবং কোভিড-১৯ রোগ নির্ণয়ের কিট উদ্ভাবন সংক্রান্ত বিষয়ে দেশ তথা বিশ্ববাসীকে অবহিত করার অংশ হিসাবে আজ মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি’র মহাপরিচালক ড. সলিমুল্লাহ এর পরিচালনায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সারা বিশ্ববাসীর অপরিমেয় দূর্ভোগের কথা স্মরণ করে দেশবাসীকে সম্মিলিতভাবে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করার আহবান জানান। 

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কার্যকর মোকাবিলার অংশ হিসাবে দেশে এ সংক্রান্ত গবেষণা যেমন, ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয় অত্যন্ত জরুরী। 

এনআইবি'তে Next generation sequencing করার যন্ত্র না থাকলেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এবং সম্মানিত সিনিয়র সচিব আনোয়ার হোসেন এর সার্বিক সহযোগিতায় জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়ের এ জটিল কাজটি সম্পন্ন হওয়ায় মহাপরিচালক মহোদয় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এনআইবি অন্যান্য emerging disease নিয়ে গবেষণা করবে বলে প্রত্যাশা করেন। 

মহাপরিচালক বলেন যে, একটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন করা হয়েছে এবং আরো ৭ টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়ের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে প্রতীয়মান হয়েছে যে এনআইবি’র সিকোয়েন্সকৃত জিনোম ইউএসএ, স্পেন এবং ইতালি এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এনআইবিতে প্রাপ্ত সিকোয়েন্সে কিছু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে এবং অধিকতর এনালাইসিসের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।

এ পর্যায়ে তিনি COVID-19 রোগ নির্ণয়ের সেবা প্রদানের প্রস্তুতির পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত কম খরচে কোভিড-১৯ রোগ সনাক্তকরণে PCR based কিট উদ্ভাবনে এনআইবি’র গবেষকদল কাজ করছেন বলে উল্লেখ করেন। এ পর্যায়ে পরীক্ষাকৃত ৭ টি নমুনায় আমাদের উদ্ভাবিত কিট এর শতভাগ সাফল্য পাওয়া গেছে। অধিক সংখ্যক নমুনায় পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এ কিট নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

তিনি এ পুরো প্রক্রিয়ায় এনআইবি’র গবেষকবৃন্দের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং নমুনা সংগ্রহে সেন্টার ফর মেডিকেল  বায়োটেকনোলজি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মুগদা মেডিকেল কলেজের দুইজন ডাক্তারের সবিশেষ ভূমিকার জন্য  ধন্যবাদ জানান। এনআইবির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মহাপরিচালক ড. সলিমুল্লাহ এর নেতৃত্বে কেশব চন্দ্র দাস, মনিরুজ্জামান, হাদিসুর রহমান, জনাব ইরফান আহমেদ, জনাব মোহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন, নজরুল ইসলাম, জনাব তাহিয়া আনান রহমান এর পাশাপাশি ডাঃ রুহুল আমিন ও ডাঃ আসিফ  রাশেদ এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. চমন আরা কেয়া ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরিত্র ভট্টাচার্য এর সহযোগিতায় SARS-CoV-2 ভাইরাসের সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়ের কাজটি সম্পন্ন হয়।     

এনআইবি’র মহাপরিচালক মহোদয় আরও জানান, বৈশ্বিক মহামারি হওয়ার সাথে সাথেই উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীগণ করোনা ভাইরাস নিয়ে কাজ শুরু করে এবং ভাইরাসের গঠনের উপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য কয়েকটি  প্রতিষেধকের মডেল তৈরি করেন যা প্রকাশনার জন্য বিশ্বখ্যাত জার্নাল ‘নেচার’ এ  রিভিঊ পর্যায়ে আছে।  

বক্তব্যের এ পর্যায়ে মহাপরিচালক মহোদয় সারাদেশে কোভিড-১৯ রোগ ব্যবস্থাপনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন এ ধরনের ভালো খবর বেশি বেশি প্রচারের মাধ্যমে আপনারা আমাদের গবেষণাখাত কে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে ভূমিকা রাখতে পারেন এবং তিনি বরাবরের মতোই গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেন।


   আরও সংবাদ