ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

১৫৩টি স্থাপনায় মিলেছে লার্ভা, আড়াই লাখ টাকা জরিমানা


প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


১৫৩টি স্থাপনায় মিলেছে লার্ভা, আড়াই লাখ টাকা জরিমানা

   

স্টাফ রিপোর্টার : এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পঞ্চম দিন আজ। 

বুধবার (১০ জুন) সকল ওয়ার্ডে মোট ১৩ হাজার ৪৬২টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে ১৫৩টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। 

এছাড়া ৯ হাজার ২৫৮টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১৪টি মামলায় মোট ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যান্য বাড়ি ও স্থাপনার মালিককে সতর্ক করা হয়।

গত ৬ জুন থেকে আজ পর্যন্ত এই ৫ দিনে ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ৬৭ হাজার ৫৯২ টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ৮৫৪টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ৪৬ হাজার ৮০১টি বাড়ও স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এছাড়া এ ৫ দিনে মোট ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। 

চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে, তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেস তৈরি হবে। ডাটাবেস অনুযায়ী পরবর্তীতেও তাদেরকে মনিটর করা সহজ হবে।

আজ উত্তরা এলাকায় মোট ৬৯১টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২১টিতে এডিস মশার লার্ভা লার্ভা এবং ৫৩৭টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এ সময় ৩টি স্থাপনার মালিককে মোট ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

মিরপুর-২ অঞ্চলের আজ মোট ২ হাজার ৮৬৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ১ হাজার ৮১৭টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এ সময়ে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিউল আজম মিরপুর সেকশন ১২ ও ১৩ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৬টি মামলায় মোট ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। 

মহাখালী অঞ্চলের অধীনে আজ মোট ১ হাজার ৬৪৪টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৫৪টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৯১৩টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মীর নাহিদ আহসান মহানগর প্রজেক্ট ও পশ্চিম রামপুরা এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৩টি মামলায় মোট ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। একই সাথে নোংরা ও এডিস মশার প্রজনন উপযোগী অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থাকায় আরও ৩১টি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে।

মিরপুর-১০ অঞ্চলে ১ হাজার ৮০৭টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৮টিতে এডিস মশার লার্ভা লার্ভা এবং ৮৫১টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সালেহা বিনতে সিরাজ কল্যাণপুর খালপাড় ও নতুন বাজার এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৩টি মামলায় মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। 

কারওয়ান বাজার অঞ্চলে মোট ১ হাজার ৯০১টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৩টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ১ হাজার ৬০৮টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

হরিরামপুর অঞ্চলে মোট ১ হাজার ৪৪২টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ১ হাজার ১২১টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। 

দক্ষিণখান অঞ্চলে মোট ৯২৯টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৯টিতে এডিস মশার লার্ভা লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৭৭৩টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। 

উত্তরখান অঞ্চলে মোট ৮০৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৪টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৫৭৩টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

ভাটারা অঞ্চলে মোট ৪৯৫টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১২টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৩৫৩টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

সাঁতারকুল অঞ্চলে মোট ৮৮১টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১২টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৭১২টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

উল্লিখিত সকল সম্ভাব্য এডিস মশার প্রজননস্থলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনাপূর্বক কীটনাশক ছিটানো হয়েছে এবং জনসাধারণকে এবিষয়ে পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলমান এই অভিযানের পূর্বে ১৬ মে থেকে শুরু করে ঈদুল ফিতরের পূর্ব পর্যন্ত ১, ৬, ১২, ১৮ ও ৩২ নম্বর মোট ৫টি ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। সে সময় ৯ হাজার ৪৬৩টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৮৭টিতে এডিস মশার লার্ভার সন্ধান পাওয়া যায়।

চিরুনি অভিযানের সাথে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ১০ মে ২০২০ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন বাড়ি, স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ পর্যন্ত মোট ৮ লক্ষ ৬২ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। 

অভিযান চলাকালে সকল এলাকাতেই এলাকাবাসীকে এডিস মশার বিস্তার রোধে সচেতন করা হয় এবং জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধানসহ সকলকে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখার পরামর্শ প্রদান করা হয়। অভিযান চলাকালে ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ, ডিএনসিসির বর্জ্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ, গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ডিএনসিসির চিরুনি অভিযান আগামীকালও অব্যাহত থাকবে।


   আরও সংবাদ