ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

সামাজিক মাধ্যমে জবি প্রশাসনের প্রতি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ প্রকাশ


প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


সামাজিক মাধ্যমে জবি প্রশাসনের প্রতি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ প্রকাশ

   

জবি প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) অনাবাসিক হওয়ায় করোনাকালে চরম বিপাকে পড়েছে ভাড়া বাসায় থাকা শিক্ষার্থীরা। ভাড়ার জন্য বাসা মালিকের চাপ ও হুমকিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব থাকায় সামাজিক যোগাযোগ গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

ফেসবুকে নিজেদের টাইমলাইনে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক গ্রুপে তারা এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসময় ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি নিজেদের অসহায়ত্ব তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের পাশে এগিয়ে আসারও আহবান জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শফিকুল ইসলাম রেজা নামে এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, তিন মাসের বকেয়া (মার্চ, এপ্রিল, মে) নিতে মালিক ফোন করে টাকা চাইলো। বললাম এখন তো খুব সমস্যা, কষ্ট হচ্ছে, আর কিছুটা সময় দেন। কিন্তু তিনি কড়া ভাবে চাইলো। এখন আমার ফোনই ধরছে না। খুব চিন্তায় আছি রুমটা আমার আছে নাকি গেছে। আর আমার দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বিভিন্ন স্থান থেকে কালেক্ট করা বই ও মালা-মাল গুলো কি পাব?

মাহাফুজুল হক লিখেছেন, আমরা সবাই নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অনেকেই টিউশন করে খরচ চালায়, এমনকি বাড়িতে টাকা পাঠায়। এমতাবস্থায় গত তিন মাস (মে মাস পর্যন্ত) ফুল ভাড়া দিয়ে আসছিলাম। এই মাসে (জুন) বাড়িওয়ালাকে বললাম অন্তত অর্ধেক ভাড়া নেয়া হোক। তিনি রাজি হননি। এমনকি বাসা ভাড়া আগের চেয়ে বেশি চাচ্ছেন। তিনি জুন মাসের মধ্যে বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্যও বলেন। এরকম পরিস্থিতিতে করনীয় কি বুঝতে পারছি না!

ফিরোজ আহমেন নামের এক শিক্ষার্থী নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন, টাকা না দিলে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এখন ঢাকা যাবো সেই টাকাও নেই। আবার বাসা ভাড়া দিতে হবে পুরোপুরি। অথচ প্রশাসন নিরব।

এদিকে 'ক্যাম্পাস খুললে বাসা ভাড়া সমস্যা নিয়ে কথা বলা হবে’ জবি ভিসির এমন মন্তব্যে সমালোচনা করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। 

ভিসির এ মন্তব্যে শিক্ষার্থী মুনতাহা মুনিরা লিখেছেন,  দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাস কবে খুলবে আমরা কেউ জানিনা। এমন অবস্থায় উনি কিভাবে বলে যে ক্যাম্পাস খুললে এই ব্যাপারে কথা বলবেন। এদিকে বাড়িওয়ালাকে ৩/৪ মাসের বেশি ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। যা সিধান্ত নেওয়ার এখনই নিতে হবে এবং তাঁকে (জবি ভিসি) ঘোষণা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের এইরকম মানসিক চাপের মধ্যে রাখার কোন মানে হয়না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ভিসি নাকি ভিসিদেরও ভিসি! ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই পরিস্থিতির ভিতরেই ভাড়া মওকুফ করছে তাহলে আমাদের ভিসি কেন 'পরে' কথার এই বাহনা দিচ্ছে। মুজিব বর্ষ,পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি অনুষ্ঠান এইবার হয়নি। সেই বাজেট থেকে প্রশাসনের উচিত ভর্তুকির ঘোষণা দেওয়া। এতো দিনেও হলের ব্যবস্থা করতে পারে নি এখন অন্ততপক্ষে ভর্তুকি দিক। নইলে ক্যাম্পাস খোলার পর যারা শুধুমাত্র টিউশনির টাকায় চলে তারা এই ভাড়ার টাকায় খাবে, না পড়ালেখা করবে! এইরকম অনিশ্চয়তা মধ্যে শিক্ষার্থীদের ঠেলে দেওয়া কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।

মাশাত জহুরা লিখেছেন, ততদিনে বাসা ভাড়া পরিশোধ করা হয়ে যাবে। নাহলে বাড়িওয়ালা বাড়ি থেকে বের করে দিবে।

আল আমিন লিখেছেন, আমাদের বই খাতা বাইরে ফেলে দেওয়ার পর উনার (জবি ভিসি) ভাড়ার বিষয়ে কোন কিছু না বললেও চলবে। সবই নিজের স্বার্থ, এই বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টুডেন্টদের প্রতি উনার কোন দরদ কোন দিন দেখি নি।

বাড়ি ভাড়ার বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, যার বাসা ভাড়া সেই দিবে। তবে যারা টিউশনির মাধ্যমে লেখাপড়া করতো অস্বচ্ছল তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। জাকাত, আর্থিক অনুদান করার জন্য আগে তালিকা করা ছিল। তাদেরকে বাসা থেকে কেউ বের করে দিচ্ছে না। বাসা থেকে মালামাল বের করে দিলে শিক্ষার্থীদের স্থানীয় থানায় মামলা করার এসময় পরামর্শ দেন তিনি।


   আরও সংবাদ