ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ ভাদ্র ১৪৩১, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মেস ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের গরীব ও মিসকিন বললেন জবি'র ভিসি


প্রকাশ: ১০ জুন, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


মেস ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের গরীব ও মিসকিন বললেন জবি'র ভিসি

   

জবি প্রতিনিধি : করোনায় মেস ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে দেশের সম্পূর্ণ অনাবাসিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন আর্থিক ব্যবস্থা না করে শিক্ষার্থীদেরকে গরীব, মিসকিন ও আত্মমর্যাদাহীনের মতো মন্তব্য করেছেন জবি ভিসি ড. মীজানুর রহমান।

শিক্ষার্থীদের বাড়ি ভাড়া সমস্যার কথা বললে তিনি শুরুতেই বলেন, মেসভাড়া নিয়ে আমাকে কেউ কল দিবানা। কোন সমস্যা নেই। আমরা কি বিজ্ঞাপন  দিছিলাম, যারা অস্বচ্ছল, দরিদ্র, কৃষক এবং দিনমজুর তাদের সন্তানদের ভর্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

মেস ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ করা হলে তিনি রেগে গিয়ে আরও বলেন, তোমরা এতো মিসকিন, নিজেদের আত্মমর্যাদা পর্যন্ত নেই। এটা কি দরিদ্রদের এতিমখানা, মাদ্রাসা? এখন তো বিড়ি-সিগারেট, রিক্সা ভাড়া, বান্ধবীরে আইস্ক্রীম খাওয়ানো লাগতেছেনা। এসব টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেনা কেন?

এদিকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রশাসনিক হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। জানা যায়, মেস ভাড়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পার্শ্ববর্তী থানায় অভিযোগ জানিয়ে আরও বাড়তি হয়রানির মুখে পড়ছেন তারা। 

প্রতিদিন মেস মালিকরা ফোনকলে ভাড়ার জন্য তাগদা দিয়ে যাচ্ছেন। ভাড়া কিছুটা মওকুফ কিংবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বাসা থেকে মালামাল বাহিরে ফেলে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এনিয়ে মালিকদের সাথে দ্বন্ধে গেলে পরবর্তীতে মেস ভাড়া পাওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। তাই বাড়ি ভাড়া নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আয়শা আফরিন লক্ষ্মীবাজার এলাকায় মেস ভাড়া নিয়ে থাকেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত মার্চ মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দেয়ার পর গ্রামের বাড়ি চলে আসি। এরপর থেকে প্রতি মাসে বাড়িওয়ালা ভাড়ার জন্য ফোন দেয়। এ নিয়ে দুই মাসের ভাড়াও পরিশোধ করেছি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে গত এক মাসের ভাড়া দিতে সমস্যায় পড়ি। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে ফোন দিলে উনি থানায় যোগাযোগ করতে বলেন। অনেক কষ্টে থানায় যোগাযোগ করলে, ওনারা আমাকেই বাড়িওয়ালার সাথে কথা বলে মিউচুয়াল করতে বলেন। 

এরপর পুনরায় প্রক্টরকে ফোন দিলে উনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোনো বড় ভাইকে বলে সমাধান করতে। এই শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আমি প্রক্টর স্যার ও থানায় ফোন দিয়েছি। কোনো সহযোগিতা পাচ্ছিই না, উল্টো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমাদের হল সুবিধা নেই, সে হিসেবে আমাদের সংকটকালীন সম্পূরক অর্থ সহায়তা দিতে পারে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম রেজা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, তিন মাসের বকেয়া (মার্চ, এপ্রিল, মে) নিতে মালিক ফোন করে টাকা চাইলো। বললাম এখন তো খুব সমস্যা, কষ্ট হচ্ছে, আর কিছুটা সময় দেন। কিন্তু তিনি কড়া ভাবে চাইলো। এখন আমার ফোনই ধরছে না। খুব চিন্তায় আছি রুমটা আমার আছে নাকি গেছে। আর আমার দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বিভিন্ন স্থান থেকে কালেক্ট করা বই ও মালা-মাল গুলো কি পাব?

ভাড়া না দিলে শিক্ষার্থীদের মালামাল হারানোর অাশঙ্কার কথা জানালে ভিসি মীজানুর রহমান বলেন, যে শিক্ষার্থী টিউশনি চলে যাওয়াতে একমাসের ভাড়া দিতে পারতেছে না, তার এমন কি সম্পদ আছে যে মালিক বাইরে ফেলে দিবে। এসময় কারো মালামালা ফেলে দিলে শিক্ষার্থীদেরকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন ভিসি।


   আরও সংবাদ