ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগির হাচিতে সংক্রমিত হাসপাতাল স্টাফ


প্রকাশ: ১১ জুন, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগির হাচিতে সংক্রমিত হাসপাতাল স্টাফ

   

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছায় স্বপন দাস (৪০) নামে এক ব্যক্তি নতুন করে করোনা ভাইরাস পজেটিভ হয়েছেন। তিনি যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণির স্টাফ (সুইপার) হিসেবে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে কর্মরত এবং চৌগাছা শহরের ঋষিপাড়ায় তিনতলা একটি নিজস্ব বাসভবনে বসবাস করেন। চৌগাছায় এর আগে সংক্রমিত চিকিৎসক ও নার্সসহ ১৬ জনকেই করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে তাকে মোবাইল ফোনে বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়। স্বপন ধারনা করছেন ওই রোগির হাচি থেকেই তিনি সংক্রমিত হয়েছেন।

মোবাইল আলাপনে স্বপন জানান, গত ৩/৪দিন আগে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি একজন ক্রিটিক্যাল রোগিকে মাস্ক পরাতে গেলে ওই রোগি হাচি দেন। ওইদিন রাত থেকেই তার জ্বরজ্বর ভাব, কিছুটা গলায় ব্যথা ছিল। পরে হাসপাতালের অন্যদের সাথে বুধবার তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। তার নমুনা পাঠানো হয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে। সেখানে বৃহস্পতিবারের পরীক্ষায় তার নমুনা পজেটিভ হয়। 

স্বপনের প্রতিবেশিরা জানান করোনা নিয়েই তিনি বুধ ও বৃহস্পতিবার চৌগাছা থেকে মোটরসাইকেলে করে যশোর গিয়ে হাসপাতালে ডিউটি করেছেন। তারা জানান স্বপন নিজের বাড়িতে বিভিন্ন রোগির ড্রেসিংসহ নানা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এই দুদিনও সকালে ও রাতে তিনি একইভাবে অন্তত ২০/৩০ জন রোগিকে নিজ বাড়িতে ড্রেসিং করেছেন ও চিকিৎসা দিয়েছেন। তারা জানান শুক্রবার সকালেও মোটরসাইকেলে চড়ে চৌগাছা শহরময় ঘুরে বেড়িয়েছেন স্বপন। 

মোটরসাইকেলে তার সাথে ছেলেও ছিল। চৌগাছা বাজার থেকে সবজিসহ নিত্য ব্যবহার্য্য সামগ্রী ক্রয় করে বাসায় গিয়েছেন। এরপর বেলা ১১ টার দিকে যশোর হাসপাতাল থেকে তাকে ফোন করে তিনি করোনা পজেটিভ জানানোর পর তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। 

এরআগে বৃহস্পতিবার চৌগাছা হাসপাতালের আয়া ও স্বপনের স্ত্রী ওটিতে আয়া হিসেবে ডিউটি করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। স্বপনের প্রতিবেশিরা বিকাল চারটায় এ প্রতিনিধিকে মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন স্বপনের বাড়ির লোকজন কারো কথা না শুনে এখনো বাড়ির বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। 

চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, স্বপন যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের স্টাফ এবং তার স্ত্রী আমার চৌগাছা হাসপাতালের আয়া। সংবাদ পেয়ে আমি মোবাইলে তাকে বাড়িতে থাকার জন্য বলে দিয়েছি। 

তিনি জানান, স্বপনের স্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবারও হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) ২/৩টি অপারেশনে চিকিৎসকদের সহযোগি ছিলেন। আমার অফিসেও এসেছিলেন। 

শনিবার সকালেই তার পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে একইসাথে তার বাড়িও লকডাউন করা হবে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।


   আরও সংবাদ