প্রকাশ: ১৪ জুন, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন
যশোর থেকে খান সাহেব : যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের পাশাপোল বাজার-দশপাকিয়া সড়কটি পাশাপোল ইউনিয়নের দু:খ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই দুই কিলোমিটার বেহাল সড়কের কারণে অন্তত বিশ হাজার মানুষকে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায় চৌগাছা-ঝিকরগাছা সড়কের পাশাপোল বাজার থেকে পাশাপোল ইউনিয়নের মধ্যমনি দশপাকিয়া বাজারের দুরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার। এ সড়কটিকে পাশাপোল ইউনিয়নের প্রধানতম সড়ক বলা হয়ে থাকে। কারন এই দশপাকিয়া বাজারে রয়েছে একটি স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ,ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া এ সড়কের পাশে পাশাপোল গ্রামে রয়েছে আরো একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ইউনিয়নের তথ্য সেবা কেন্দ্র,গ্রামীন ব্যাংকের পাশাপোল শাখা, পোস্ট অফিসসহ বেশ কিছু স্থাপনা।
এলাকাবাসী জানান ১৯৯২ সালে পাশাপোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা মাওলানা আবু সাঈদ এ সড়কের হেরিংবোন কার্যক্রম শুরু করেন। পরবর্তীতে সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমামুল হাসান টুটুল এবং পরবর্তীতে সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল কাদের হেরিংবোন কার্যক্রমের পরিসমাপ্তি ঘটান। কিন্তু দীর্ঘ বিশ বছরের ব্যাবধানে সেই হেরিংবোন এখন আর চলাচলের উপযোগী নেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই মানুষের দূর্ভোগের শেষ থাকেনা। সরকার আসে সরকার যায় প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় কিন্তু পাশাপোলবাসীর দূর্ভোগ পিছু ছাড়ে না।
কথা হয় এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী গরীবপুর আর্দশ বিদ্যাপিঠের শিক্ষক কবীর হোসেনের সাথে তিনি বলেন ভাই কি যে বিপদের মধ্যে আছি তা বলে বোঝাতে পারবো না। পাশাপোল গ্রামের ব্যবসায়ী শিমুল হোসেন, জুলফিকার রহমান বটু,কবি ফজলুর রহমান , জাহিদুল ইসলাম,লিটন মিয়া, কৃষক মুকুল হোসেন, তোজাম্মেল হক, মাওলানা মিজানুর রহমানসহ সবার একই কথা মাত্র দুই কিলোমিটার সড়ক পাকা না হওয়ার কারনে আমরা সেই আদিমকালের অবস্থায় আছি। দশপাকিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মেজর হোসেন ও সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কাদের বলেন বর্ষাকালে সড়কের বেহালদশার কারনে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে।
গঙ্গানন্দপুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক সবুজ হোসেন বলেন, এ সড়ক দিয়ে পাশাপোল, দশপাকিয়া, মৎস্যরাঙ্গা, বুড়িন্দিয়া গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে কিন্তু বারবার এ সড়ক পাকাকরণের কথা শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি।
সড়কের ব্যাপারে জানতে চাইলে পাশাপোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন সড়কটি পাকা করনের জন্য টেন্ডার হয়েছে এবং ওয়ার্ক অর্ডারও হয়ে গেছে দ্রুত কাজ শুরু হবে।
সড়কের ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলসারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী মাসুদ চৌধুরী বলেন পাশাপোল বাজার থেকে দশপাকিয়া বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার (২.৩৮০) সড়কের জন্য এক কোটি ৮৯ লাখ বরাদ্দ দিয়ে টেন্ডার এবং ওয়ার্ক অর্ডারও হয়ে গেছে। করোনা এবং বৃষ্টির কারনে কাজ শুরু হতে দেরি হচ্ছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে ইনশাল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, কেবলমাত্র এ সড়ক নয় আমজামতলা বাজার থেকে বাড়িয়ালী সড়ক, রাণিয়ালী থেকে সুরেস্বরকাঠি সড়ক এবং নিমতলা বাজার থেকে বাড়িয়ালী সড়কের পাকাকরন কাজও দ্রুত শুরু হবে।
সড়কের ব্যাপারে জানতে চাইলে এলজিইডির চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মতিন জানান সড়কের সর্বশেষ কার্যক্রমের কাগজপত্র হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। আমি শুনেছি সবকিছু হয়ে গেছে তবে কাগজপত্র এখনও হাতে পাইনি।